পড়ার সময় ঘুম তাড়ানোর উপায়
পড়ার সময় ঘুম তাড়ানোর উপায়

পড়ার সময় ঘুম তাড়ানোর উপায় গুলো সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন, কার্যকরী ৫টি উপায় জানতে পারবেন যা আপনার ঘুম দূর করতে বিশেষ সাহায্য করবে।

আসলে পড়তে বসলে তো আমাদের সকলেরই কম বেশি ঘুম পায়। অনেকের মনে এই প্রশ্নটা আসে পড়তে বসলে ঘুম অতিরিক্ত আসে কেন? এ থেকে মুক্তির উপায় কী? আসলে আপনি যখনই মনোযোগ দিয়ে পড়তে বসবেন তার কিছুক্ষণের মধ্যেই কিন্ত ঘুমের একটা অনুভব চলে আসবে।

আমাদের মাঝে এই ব্যপারটা যেন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আর তখন এমন ঘুমই আসে, যা সামলানো অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। যা পড়াশোনার অনেকটা ক্ষতি করে, বিশেষ করে পরীক্ষার সময়। তখনই কিন্ত পড়াশোনার প্রয়োজন একটু বেশি হয়ে থাকে।

এই আর্টিকেলে আপনি জানতে পারবেন পড়ার সময় ঘুম তাড়ানোর সহজ ৫টি উপায়। এই টিপস গুলো রীতিমতো পালন করতে পারলে খুব সহজেই ঘুম তাড়াতে পারবেন এবং বেশিক্ষণ পড়াশোনা করতে পারবেন। তাহলে জেনে নেওয়া যাক –

ঘুম তাড়ানোর সহজ ৫টি উপায়

০১। ঠাণ্ডা পানি পান ও ব্যবহার করুন।

পড়ার সময় ঘুম তাড়ানোর সর্বপ্রথম ও প্রধান উপায়টি হচ্ছে পড়ার টেবিলে বসার আগে স্বাভাবিক ঠাণ্ডা পানি পান করা ও হাত মুখ ভালভাবে ধুয়ে সতেজ হওয়া। অর্থাৎ পড়ার আগে অবশ্যই কিছু পুষ্টিকর খাবার খেয়ে নিবেন এবং সাথে হাতের নিকটে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করবেন। একটু পর পর পানি খেলে ঘুম অনেকটাই কেটে যায়। যখন আপনি ঘুম অনুভব করবেন তখন উঠে পানি খেতে ইচ্ছা করে না, তাই কাছে রাখলে খুব সহজেই পানি খেতে পারবেন এবং ঘুম দূর করতে পারবেন।

তাছাড়া যখনই ঘুম চলে আসবে, ঠিক তখনই সাথে সাথে হাত মুখ ধুয়ে ও চোখে ভালভাবে পানি দিয়ে ফ্রেশ হওয়ার চেষ্টা করবেন, এর ফলে ঘুম চলে যাবে। পানি পান করা ও হাত মুখ ধুয়ে সতেজ হয়ে নেওয়া, আপনার ঘুম তাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

০২। স্থান পরিবর্তন করে পড়ুন।

এক স্থানে বসে একটানা পড়ার চেষ্টা করবেন না। এতে খারাপ লাগতে পারে বা বিরক্তি চলে আসতে পারে, যার ফলে ঘুম চলে আসবে। একটু নাড়াচাড়া করেই পড়তে হবে, পড়ার প্রতি কোন বিরক্তি আসবে না এবং এর ফলে ঘুম ও আসবে না। আবার অনেকেই আছে, বিছানায় শুয়ে পড়ার চেষ্টা করে, যেটা একদমই অকার্যকরী উপায় এবং ভুল পদ্ধতি। বিছানায় বসে বা শুয়ে পড়লে আপনার ঘুম আরও তারাতারি চলে আসবে যা তাড়ানো অনেক কঠিন হয়ে যাবে। বিছানায় ঘুমিয়ে গেলে সহজেই ঘুম ভাঙবে না।

এইজন্য টেবিলে বসে পড়তে হবে, মাঝে মাঝে একটু দাড়িয়েও পড়তে পারেন অথবা বন্ধুদের টেবিলে বসে একসাথে গ্রুপ স্টাডি ও করতে পারেন। অর্থাৎ একটানা এক স্থানে পড়ে বিরক্তি বা খারাপ লাগা ভাবটা না এনে স্থান পরিবর্তন করে বা অন্যদের সাথে গ্রুপ স্টাডি করার চেষ্টা করুন, দেখবেন ঘুম চলে যাবে।

০৩। পড়ার মাঝখানে চা বা কফি খান।

পড়ার সময় ঘুম চলে আসাটা স্বাভাবিক, তাই বলে ঘুমিয়ে পড়লে তো আর পড়া হবে না। এইজন্য আপনাকে কার্যকরী উপায় গুলো অনুসরণ করতে হবে। পড়ার সময় ঘুম তাড়ানোর অন্যতম কার্যকরী উপায় হচ্ছে মাঝ- খানে চা বা কফি খাওয়া। আমরা জানি চা কফি ঘুম তাড়ানোর অন্যতম খাবার।

পড়ার মাঝখানে যদি ঘুমের ভাব চলে আসে, তাহলে ১ কাপ চা বা কফির ব্যবস্থা করে রাখুন। ঘুম তাড়ানোর জন্য এটি অনেকটা সহায়ক। তবে অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক হবে না, শরীরের ক্ষতি করবে। পড়ার টেবিলে বসার আগে খেতে পারেন বা মাঝখানেও খেতে পারেন। ১ কাপ চা বা কফি ঘুম তাড়ানোর পাশাপাশি শরীর সতেজ রাখতেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

রাত জেগে পড়াশোনা বা কাজ করছেন, তাহলে জেনে নিন কি খাওয়া উচিত? এখানে ক্লিক করুন!

০৪। ২ ঘণ্টা পর পর সামান্য বিরতি নিন।

একটানা কখনোই পড়বেন না ২ ঘণ্টা পর পর সামান্য বিরতি নিন। যেকোনো কাজই একটানা করলে বিরক্তি চলে আসতে পারে এবং বেশিক্ষণ কাজ করলে শরীরে ক্লান্তি চলে আসে যা মনোযোগ নষ্ট করে। দেহের ক্লান্তি হওয়ার ফলে ঘুম চলে আসার সম্ভবনা অনেক বেশি থাকে।

এইজন্য ২ ঘণ্টা পর পর ১০ মিনিটের বিরতি নিতে পারেন যেগুলো পড়েছেন সেগুলো নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা করতে পারেন, বন্ধুদের সঙ্গে একটু আড্ডা দিতে পারেন, মন খুলে হাসাহাসি করতে পারেন, কাছের কোন মানুষের সাথে গল্প করতে পারেন অথবা ভালো লাগার একটা গানও শুনতে পারেন।

এটি ঘুম তাড়ানোর জন্য সত্যিই অনেক কার্যকর। আবার নতুন কোন বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করে দিতে পারবেন সহজেই। মন ফ্রেশ থাকলে, পড়াশোনা করতে ভালো লাগবে। আর মন ফেশ করার জন্য ২ ঘণ্টা পর পর বিরতি নিয়ে উপরের কাজ গুলো করতে পারেন।

০৫। জোরে জোরে পড়ার চেষ্টা করুন।

অনেকেই পছন্দ করে খুব আস্তে বা মনে মনে পড়তে। এইভাবে পড়া অনেকের অভ্যাস হয়ে গেছে। মনে মনে পড়ার অভ্যাস ত্যাগ করা উচিত। কারণ মাঝেমাঝে জোরে জোরে না পড়লে সহজেই ঘুম চলে আসবে।

যখনই দেখবেন আপনার ঘুমের ভাব চলে আসছে, তখনই জোরে জোরে পড়ার চেষ্টা করুন। মনে মনে পড়ার সময় আপনি কখন যে অন্য চিন্তার সাগরে ডুব দেবেন তা টেরও পাবেন না। কিন্তু মুখে উচ্চারণ করে বা শব্দ করে পড়লে অন্য চিন্তা করামাত্রই তোমার পড়ার শব্দ থেমে যাবে।

ফলে সহজেই বুঝতে পারবেন কখন আপনি বিচ্ছিন্ন হচ্ছেন বা ঘুম চলে আসছে কিনা। তারপর খুব সহজেই উপরোক্ত উপায় গুলো ফলো করতে পারেন। অর্থাৎ চোখে পানি দিয়ে, ফ্রেশ হয়ে বা একটু বিরতি নিয়ে আবার ও শুরু করতে পারেন। দেখবেন ঘুম অনেকটা কেটে যাবে। জোরে জোরে পড়ার সুবিধায় বেশি এবং আপনিও চেষ্টা করুন। অন্ততপক্ষে যখন ঘুমের অনুভব করবেন তখনই চেষ্টা করুন।

পয়েন্ট গুলো আবার পড়ুন, মনে রাখুন ও অনুসুরন করুন, যা ঘুম তাড়ানোর জন্য যথেষ্ট উপকার করে আপনার পড়াশোনাকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করবে।

০১। ঠাণ্ডা পানি পান ও ব্যবহার করুন।

০২। স্থান পরিবর্তন করে পড়ুন।

০৩। পড়ার মাঝখানে চা বা কফি খান।

০৪। ২ ঘণ্টা পর পর সামান্য বিরতি নিন।

০৫। জোরে জোরে পড়ার চেষ্টা করুন।

আরও জানুন –

জেনে নিন রাত জেগে মোবাইল ফোন ব্যবহারের কুফল

এ সময়ের সেরা ১০টি পেশা যা অবশ্যই আপনার জানা দরকার

যে ১০টি কাজ আপনাকে সফলতার দিকে নিয়ে যাবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here