ব্যবসায় সফল হওয়ার উপায়
ব্যবসায় সফল হওয়ার উপায়

বর্তমান বিশ্বে সেরা পেশা গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যবসায়। পুরো বিশ্বের অর্থনীতি নির্ভর করছে ব্যবসায় গুলোর উপর। স্বাধীনভাবে কাজ করা, নিচের পছন্দ মতো চলাফেরা করা ও সকল সিদ্ধান্ত নিজের ইচ্ছা মতো নেওয়া যায়, যার ফলে এই পেশাতে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ যোগ দিচ্ছে। তবে গুরুত্বপূর্ব ব্যপার হচ্ছে ব্যবসায় করে অনেকেই সফলতার স্বর্ণ শিখরে পৌঁছাতে পেরেছে এবং অনেকেই পারে নাই।

এই আর্টিকেল আপনি জানতে পারবেন, ব্যবসায় সফল হওয়ার ১০টি কার্যকরী ফর্মুলা, যেগুলো অনুসরণ করলে আপনি আপনার ব্যবসায় খুব ভালো পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন।

সফলতা এমন একটি শব্দ যা সবাই নিজের জন্য ব্যবহার করতে চাই। অনেকে দিন রাত কষ্ট করে সফলতা শব্দটি পেতে চাই আবার অনেকেই বিনা পরিশ্রমে স্বপ্ন দেখে, এইজন্য সফলতা সবার নামের আগে থাকে না।
ব্যবসায় ২ ধরনের, ১। অনলাইন ২। অফলাইন। ব্যবসায়ে সফল হওয়ার জন্য আপনাকে অনেক বিচক্ষণ, দূর দৃষ্টি, সঠিক উপায়ে কঠোর পরিশ্রমী হওয়া উচিত। এবং পাশাপাশি অনেক কার্যকরী কৌশল সম্পর্কে ধারণা রাখা উচিত। তাহলে জেনে নিন ফর্মুলা গুলো –

০১। রির্সাচ করার ক্ষমতাঃ

ব্যবসায় করতে হলে, অবশ্যই আপনার রির্সাচ করার ক্ষমতা থাকতে হবে। বলা যায়, ব্যবসায় শুরু করার অন্যতম ও প্রধান ধাপই হচ্ছে রির্সাচ করা, অর্থাৎ আপনি কি ধরনের ব্যবসায় শুরু করবেন, ব্যবসায় ভবিষ্যৎ কেমন হবে, ইত্যাদি ব্যাপার নিয়ে অনুসন্ধান বা গবেষণা করার ক্ষমতা অবশ্যই থাকতে হবে। বর্তমান যেকোনো বাজারের মধ্যে প্রতিযোগিতা রয়েছে। বাজারে নিজেকে টিকে রাখতে হলে অবশ্যই নিজের ব্যবসায়টা অন্যদের চেয়ে ভালো রাখতে হবে, সঠিক ও পর্যাপ্ত সাপোর্ট দিতে হবে। বাজারে যারা নিজেকে একটি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে পারেন কেবল তারাই সফলতার সাথে টিকে থাকে। এবং তার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে বেশি বেশি রির্সাচ করা ও জানা।

০২। ব্রেনস্ট্রমিং করার সক্ষমতাঃ

যেকোনো কাজে সফলতা পাওয়ার জন্য সেই কাজটা ব্রেনস্ট্রমিং করা আবশ্যক। ব্যবসায়ের জন্য ব্রেনস্ট্রমিং করা অনেক কার্যকরী ও গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ। ব্রেনস্ট্রমিং কী এইটা আগে জানা উচিত? সহজ ভাষায় যদি বলি ব্রেনস্ট্রমিং হচ্ছে যেকোনো বিষয় নিয়ে গভীর চিন্তা করা। যে প্রশ্নগুলো কোন বিষয় থেকে আসছে বোঝা যায় না। ব্রেনের সমস্ত কোষ গুলিকে নাড়িয়ে দেয়, সেই প্রশ্নগুলোকে ব্রেনস্ট্রর্মিং বলা যেতে পারে। আপনার বিজনেস প্লানিং নিয়ে ব্রেনস্ট্রমিং করতে পারেন, যথেষ্ট উপকার পাবেন।

০৩। সঠিক ও নিখুঁত নির্বাচনঃ

শুধু ব্যবসায় নয়, সবকিছুতেই সফলতা পাওয়ার জন্য আপনাকে সঠিক ও নিখুঁত নির্বাচন করতে হবে। মনে রাখতে হবে সঠিক সময়ে সঠিক, ও নিখুঁত সিদ্ধান্ত গুলোই জীবন পাল্টে দিতে সক্ষম। ব্যবসায় দেওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে সঠিক জায়গা ব্যবস্থা করতে হবে, সঠিক প্রোডাক্ট বাছাই করতে হবে, ব্যবসায় প্রচারনা করতে হবে এর জন্য বিনিয়োগ সঠিক। এককথায় সবকিছুই আপনাকে সঠিক ও নিখুঁত ভাবে নির্বাচন করতে হবে।

০৪। কম্পিটিটর ব্লিশেষণঃ

ব্যবসায় সফল হওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বা ফর্মুলা হচ্ছে কম্পিটিটর ব্লিশেষণ করা। অনলাইন হোক বা অফলাইন হোক, বিজনেস শুরু করার আগে অবশ্যই আপনাকে কম্পিটিটর খুঁজে বের করা উচিত এবং খুব নিখুঁত ভাবে ব্লিশেষণ করা উচিত। কেন কম্পিটিটর ব্লিশেষণ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ? আসলে আপনি যেই বিজনেস প্লানিং নিয়ে বসে আছেন, সেগুলো বর্তমানে মার্কেটে কেমন চলে, চাহিদা আছে কী, বাকি বিজনেস মালিকরা লাভবান হচ্ছে কী, প্রোডাক্ট সেলিং ঠিকভাবে পর্যাপ্ত হচ্ছে কী, না হলে কী সমস্যা ছিল, প্রোডাক্টের নাকি সার্ভিসের ইত্যাদি বিষয় গুলো জানতে পারবেন। এর ফলে আপনিও সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে পারবেন।

০৫। ধাপে ধাপে কাজ সম্পন্ন করাঃ

ধাপে ধাপে যেকোনো কাজ সম্পন্ন করলে এইটার ফলাফল অনেক ভালো হয়। বিজনেসে সফল হওয়ার জন্য অর্থাৎ ভালোভাবে একটা বিজনেস প্রতিষ্ঠা করার জন্য অবশ্যই আপনাকে অনেক গুলো কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এই কাজগুলো যদি ধাপে ধাপে হয়, তাহলে ব্যবসায়ে সফল হওয়ার সুযোগ থাকবে বেশি।

০৬। আইডিয়া ও প্লানিং বৃদ্ধি করাঃ

ছোট খাটো বিজনেসকে উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রধান মাধ্যমই হচ্ছে সর্বদা আইডিয়া বের করা ও প্লানিং বৃদ্ধি এবং উন্নত করা। যারা আজকে বড় বড় কোম্পানির মালিক হয়েছে, তারা সবাই প্রথমে ছোট পরিসরের বিজনেস দিয়ে শুরু করেছিল। তাদের কন্টেন্ট প্লানিং, কন্টেন্ট ডেভেলপিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, প্রোডাক্ট ইম্প্রোভিং সহ আরও নানান মার্কেটিং স্ট্রেটেজি অনুসরণ করার ফলে আজকে অনেক বড় পর্যায়ে চলে আসছে, তাই আপনিও আপনার বিজনেসকে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে উচ্চ পর্যায়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন। আর তার জন্য সবসময় আইডিয়া ও প্লাইং বৃদ্ধি করতে হবে।

০৭। নিজেকে সর্বদা অনুপ্রাণিত করুন।

অনুপ্রেরনা এমন এক শক্তি, যা যেকোনো কঠিন পরিস্থিতেও নিজেকে কাজের মধ্যে বা লক্ষ্যের মধ্যে ডুবিয়ে রাখা যায়। অনুপ্রেরণা হচ্ছে আপনি হেরে যাচ্ছেন, দুর্বল হয়ে পড়েছেন, হতাশায় ভুগছেন এবং শেষ পর্যন্ত নিজের লক্ষ্যে আর অটুট থাকতে পারছে না, তবুও আপনাকে আশার আলো জালিয়ে ঠিকেই রাখবে। বিজনেসের জন্য নিজেকে কিভাবে অনুপ্রাণিত করবেন? প্রথমে আপনি আপনার সম্পৃক্ত সফল বিজনেস ম্যানদের নিয়ে স্টাডি করতে পারেন, তাদের স্ট্রেটেজি গুলো আপনি অনুসরণ করতে পারেন। এবং তারা কিভাবে সফল হয়েছে জানার চেষ্টা করুন, আর নিজেকে সর্বদা অনুপ্রাণিত করুন। নিজের মন ও কার্যক্ষমতাকে আরও শক্ত করে তুলুন, নতুন নতুন ধারণা বের করার চেষ্টা করুন।

০৮। ভালোবেসে কাজ করাঃ

সবসময় নিজের কাজকে ভালোবাসা ও সম্মান করা উচিত। প্রকৃত ভালোবাসার কাছে প্রায় সবকিছুই হেরে যেতে বাধ্য। যেকোনো কাজকে যদি ভালোবাসেন তাহলে সেই যথেষ্ট ভালো ফলাফল আশা করতে পারবেন। স্টিভ জবস এক ব্যক্তিতায় বলেছিল, সফলতা খুব সহজেই পাওয়ার আগে, তুমি তোমার ভালোবাসার কাজ গুলো খুঁজো। ভালোবেসে কাজ করার অনেক সুবিধা রয়েছে, যেমনঃ দীর্ঘ সময় কাজ করার যায়, কাজের মাঝখানে কোন বিরক্তি আসে না, ডেভেলপিং করার সাহস থাকে, প্লানিং আরও বৃদ্ধি করার মন মানসিকতা তৈরি হয়, অর্থাৎ ভালোবাসার কাজটাকে এক সময় অনেক বড় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা জাগে। তাহলে কেনই বা নিজের কাজকে ভালোবাসবেন না, আপনার ব্যবসায়কে সম্মান করবেন না।

০৯। ব্যর্থ হলে আবার শুরু করাঃ

ছোট খাটো ভুল সিদ্ধান্তের বিনিময়েই কিন্ত আপনি অনেকটা পিছিয়ে পড়তে পারেন। প্রতিটা মানুষের জীবনেই ব্যর্থতা রয়েছে। যেকোনো কাজে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ফেইস পড়তে পারেন। যার ফলে বিজনেসে মাঝে মাঝে ব্যর্থতা চলে আসে। তবে আপনাকে আরও শক্তভাবে উঠে আসতে হবে, নতুন নতুন স্ট্রেটেজি বের করতে হবে। বিজনেসকে মার্কেটিং করে আরও ভালোভাবে প্রমোট করতে হবে।

১০। শেষ পর্যন্ত লেগে থাকাঃ

সফল হওয়ার অন্যতম ও শেষ ফর্মুলা হচ্ছে আপনাকে শেষ পর্যন্ত লেগে থাকতে হবে। যেকোনো কাজের শেষ পর্যন্ত যাওয়ার চেষ্টা করবেন। যদি আপনার স্ট্রেটেজি অনেক ভালো হয়, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ভালো পণ্য বিক্রি করার চেষ্টা করেন। এবং বিজনেসের সকল কাজ ধাপে ধাপে সম্পন্ন করার চেষ্টা করেন। তাহলে সফলতা আসবেই, একদিন আপনি ব্যবসায়কে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারবেন। এইজন্য আপনাকে শেষ পর্যন্ত লেগে থাকতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here