বাংলা ভাষায় ব্লগিং
বাংলা ভাষায় ব্লগিং করুন

বাংলা ভাষায় ব্লগিং করে অনলাইন থেকে আয় করতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। বর্তমানে বাংলা ভাষায় ব্লগিং করেও হাজার হাজার টাকা অনলাইন থেকে আয় করা সম্ভব।

ইতোমধ্যে অনেকেই বাংলা ভাষায় ব্লগিং ওয়েবসাইট বানিয়ে সফল হয়েছেন এবং যথেষ্ট ভালো ইনকাম করছেন। অনলাইন থেকে আয় করার উপায় গুলোর মধ্যে ব্লগিং সেক্টর এখন অন্যতম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

স্বাধীনভাবে কাজ করা যায় এবং যখন ইচ্ছা তখন যেখানে ইচ্ছা সেখানে বসে কাজ করার সুযোগ সুবিধা রয়েছে বলেই প্রতিনিয়ত সারা বিশ্বের মানুষ ব্লগিং সেক্টরে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন।

ব্লগিং করে কি কি উপায়ে আয় করা সম্ভবঃ

ব্লগিং করে অনেক উপায়ে ইনকাম করা সম্ভব। জনপ্রিয় ও প্রধান উপায় গুলো হচ্ছে –

০১। গুগল অ্যাডসেন্স

ওয়েবসাইটে ব্লগিং করে ইনকাম করার অন্যতম প্রধান, জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ উপায় হচ্ছে গুগল অ্যাডসেন্স। যেকোনো দেশে বসেই গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে আয় করছে লাখ লাখ অনলাইন প্রফেশনরা। আপনিও চাইলে ব্লগিং করে অনলাইন থেকে ইনকাম করার এই জনপ্রিয় উপায়টি বেঁচে নিতে পারেন।

০২। কোন পণ্য সেল

আপনার একটা ওয়েবসাইট আছে, যেখানে আপনি নিয়মিত টেকনোলজি নিয়ে অনেক কার্যকরী ও সহায়ক কনটেন্ট পাব্লিশ করছেন। যখন প্রতিনিয়ত কনটেন্ট পাব্লিশ করতে থাকবেন একটা সময় অনেক জনপ্রিয় হয়ে যাবে। এছাড়াও এসইও করে আপনার টার্গেটেড ট্রাফিক গুলো নিয়ে আসতে পারেন। মনে রাখবেন, আপনার ওয়েবসাইটের এক একটা ভিজিটরই কাস্টমার। টার্গেট অনুযায়ী যেকোনো দিকে তাদের কনভার্ট করতে পারবেন।

এখন আপনার ওয়েবসাইটে টেকনোলজি যেকোনো পণ্য সেল করতে পারবেন। এইটা অনেকটা ই কর্মাসের বিজনেসের মতো। ব্লগিং করে ট্রাফিক আনলেন আর সেই ট্রাফিক দিয়ে অনলাইনে বিজনেস শুরু করে দিতে পারবেন।

০৩। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

ব্লগিং করে আপনি অন্য যেকোন বৃহৎ মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে পারবেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শব্দটা এখন খুব পরিচিত ও জনপ্রিয়, হাজার হাজার মানুষ অ্যামাজন, আলি এক্সপ্রেস সহ অনেক ই-কমার্স কম্পানিতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে যথেষ্ট ইনকাম করছে। আপনি ও চাইলে ব্লগিং করার মাধ্যমে শুরু করতে পারেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংটা কি একটু সহজ ভাষায় ও সংক্ষিপ্তভাবে বলছি, আপনার ওয়েবসাইট থেকে যারা অ্যাফিলিয়েট সেবা অন্তর্ভুক্ত দিচ্ছে তাদের কোন পণ্য সেল করে দিতে পারলে ওই কোম্পানি আপনাকে একটা নির্দিষ্ট কমিশন দিবে, এইটাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।

০৪। লোকাল স্পন্সর বা অ্যাড

ব্লগিং করে আয় করার আরেকটি জনপ্রিয় উপায় হচ্ছে লোকাল স্পন্সর বা অ্যাড। অর্থাৎ ধরুন আপনার একটা ব্লগিং ওয়েবসাইট আছে হেল্থ রিলেটেড, আর সেখানে দৈনিক ২০,০০০ হাজার ভিজিটর আসে। এখন আপনি ইচ্ছা করলে যেকোন লোকাল হসপিটাল গুলোকে অফার করতে পারেন তাদের এড বসানোর জন্য।

কেন বাংলা ভাষাই ব্লগিং শুরু করবেন?

আমরা ইতিমধ্যে জানি, বর্তমানে সারাবিশ্বে লাখ লাখ মানুষ কোন নির্দিষ্ট তথ্য খোঁজার জন্য সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে সার্চ করছে প্রতিনিয়ত। যদি একটু ভিতরে চিন্তা করি তাহলে দেখতে পারবো, সেই সব তথ্য গুলো প্রধানত দিচ্ছে ওয়েবমাস্টাররা। ওয়েবমাস্টাররা কারা? যার একটা ওয়েবসাইট আছে, সেই ওয়েবমাস্টার। সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে ইংলিশ কনটেন্ট সবচেয়ে বেশি এবং ইংলিশ কন্টেন্টের ইনকাম ও বেশি। তাই আপনি যদি ইংলিশে এক্সপার্ট হয়ে থাকেন, অর্থাৎ ভালোভাবে মানসম্মতভাবে ইংলিশ পড়তে ও লিখতে পারেন, তাহলে আপনার জন্য ইংলিশে ব্লগিং করাই উত্তম। ভালো ইনকাম করতে পারবেন পাশাপাশি বড় প্লানিং ও করতে পারবেন। তাই বলে বাংলা কনটেন্টের যে ভ্যালু নাই, তা কিন্ত নয়।

আপনি যদি বাংলা ভাষাই সঠিকভাবে ব্লগিং করতে পারেন, ভালো মানের একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন এবং শেষে প্রচুর ট্রাফিক নিয়ে আসতে পারেন, তাহলে বাংলা সাইট দিয়েও আপনি যথেষ্ট ইনকাম করতে পারবেন।

আপনারা জানেন এখন গুগল আডসেন্স বাংলা কনটেন্টে সমর্থন করে। এছাড়া আপনার সাইটে যদি প্রচুর ট্রাফিক থাকে, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট কিছু জাইগা বিক্রি করেও আরনিং করতে পারবেন। তাছাড়া টার্গেটেড ট্রাফিক দ্বারা নিজের কোন প্রোডাক্ট বিক্রিও করতে পারবেন। আর দেশি স্পন্সরতো আছেই। বাংলাভাষাই যেকোনো কিছু লেখা সহজ হওয়াই, ব্লগিং করে সাফল্য পাওয়া যাই, মাঝপথে বিরক্তি লাগে না। তাছাড়া বাংলাই তথ্য খোঁজার সংখ্যাও কিন্ত কম নই। এবং দিন দিন তো বাড়ছেই। এই কারণ গুলোর জন্য আপনি বাংলা ভাষাই ব্লগিং শুরু করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন একটা কথা – যেকোনো সেক্টরে অনেক কষ্টের ফলেই কিন্ত ভালো কিছু করা সম্ভব হয়। এখানে ও আপনাকে অনেক সময় দিতে হবে, ইউনিক প্লানিং করতে হবে।

কিভাবে ওয়েবসাইটের প্লানিং তৈরি করবেন?

এখানে ওয়েবসাইটের প্লানিং বলতে আমি বুঝাতে চেয়েছি, কি নিস নিয়ে সাইট শুরু করবেন। ম্যাল্টি নিস নিয়ে শুরু করবেন নাকি সিংগেল নিস নিয়ে শুরু করবেন এবং কি ধরনের নিস নিয়ে কাজ শুরু করবেন। নিস নির্বাচন করার সময় প্রথম কথা হচ্ছে – আপনার কোন বিষয়টার প্রতি আগ্রহ আছে বেশি সেইটা সামনে রাখা। কি নিয়ে লিখা লিখি করতে আপনার ভালো লাগে। সেইটা নিয়েই শুরু করুন, তাহলে অনেক কনটেন্ট দিতে পারবেন, ভালো ধারণা তৈরি করতে পারবেন খুব সহজেই।

blogging করার সময় একটা প্রধান কথা মাথাই রাখা উচিত সেটা হচ্ছে সঠিক, কোন কিছু লেখার সময় সৎ এবং নির্ভুল তথ্য দিতে হবে, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভুল এবং ব্রিভান্তিকর তথ্য দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ, তর্ক বিতর্কের বা মিথ্যা বিভ্রান্তিকর কোন আর্টিকেল পাব্লিশ করা যাবে না।

এইভাবেই একটা কনটেন্ট প্লানিং তৈরি করবেন আপনার ওয়েবসাইটের জন্য। এখন বাংলাদেশ থেকে ডোমেইন এবং হোস্টিং নিয়ে খুব সহজেই শুরু করে দিতে পারবেন। ডোমেইন কিনার বাছাই করার সময় সহজ অ্যান্ড শর্ট নাম খুঁজবেন অর্থাৎ এমন নাম নির্বাচন করবেন যেন সবাই সহজেই মনে রাখতে পারে। তাহলে ব্র্যান্ড হওয়ার সম্ভনা বেশি থাকবে।

ওয়েবসাইটের জন্য কোন প্লাটফর্ম বেছে নিবেন?

আমার কাছে ওয়ার্ডপ্রেসই হচ্ছে উত্তম সব কিছুর থেকে। লাখ লাখ ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা তৈরি করা আছে এবং প্রতিনিয়ত করছে। এখানে কোনো কোডিং জ্ঞান লাগবে না, তাছাড়া ওয়ার্ডপ্রেস এসইও ফ্রেন্ডলি। যেকোনো পোস্টকে এসইও ফ্রেন্ডলি করতে পারবেন খুব সহজেই। আরও অনেক অনেক সুবিধা রয়েছে এখানে। তাই কেনই বা আপনি ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা ওয়েবসাইট তৈরি করবেন না। আমি মনে করি এইটাই আপনার উপযুক্ত জাইগা, যেখানে খুব সহজেই ব্লগিং করতে পারবেন।

ওয়েবসাইটের‍ কনটেন্ট প্লানিং কিভাবে করবেন?

আমার কথা বলছি – আসলে আমি নিসটা ১০০% নির্বাচন করেই, রিসার্চ করা শুরু করে দেই গুগলে, ইউটিউবে এবং ফেসবুকে। কম্পিটিটর গুলো খুঁজে বের করি একটা একটা করে। কম্পিটিটর গুলো এনালাইছিস করি সঠিক ভাবে। এই নিস নিয়ে কে কি লিখছে, কি মন্তব্য করছে। এইটার কি আসলেই চাহিদা আছে, কেমন চাহিদা আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। কম্পিটিটর সাইটের কনটেন্ট কেমন আছে। তাদের প্লান কেমন সেখান থেকে একটা বড় ধারণা নিয়ে থাকি, কিভাবে তাদের চেয়ে ভাল মানের কনটেন্ট দেওয়া যাই। কিভাবে কনটেন্ট গুলো সাঁজালে সবার জন্য সুবিধা হবে, খুব সহজেই পড়তে পারবে ইত্যাদি বেপার গুলো ডেভেলপ করে থাকি, কিন্ত সাবধান কনটেন্ট কপি করা যাবে না। গুগল এখন খুব স্মার্ট, এখন গুগল পাণ্ডা কনটেন্টকে খুব নিখুঁত ভাবে এনালাইসিস করে কপি পেলে পেনাল্টি ও দিয়ে দিতে পারে।

এখন আমি কত বড় সাইট তৈরি করবো, আমার কাছে কতটুক সময় আছে, দিনে কতটা সময় দিতে পারবো, কি কি নিয়ে লেখবো, তার একটা প্লানিং করে ফেলি অ্যান্ড ভাল ভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করে সেগুলো প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করে স্টেপ বাই স্টেপ সাজিয়ে ফেলি একটা ফাইলে, কি কি কাট্যাগরি হবে, কতটা কনটেন্ট দিবো ৫০+, ১০০+, নাকি ২০০। তারপর সঠিক এবং যুক্তিসঙ্গত ভাল মানের কনটেন্ট লেখা শুরু করি। এসিও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখার চেষ্টা করি।

বাংলায় কিভাবে কিওয়ার্ড রির্সাচ করবেন?

হ্যাঁ, এই বিষয়টাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আসলে বাংলাই কিওয়ার্ড এর সার্চ ভলিউম খুবি কম হয়ে থাকে, আর এইটা স্বাভাবিক। ইংলিশে তো অনেক টুলস আছে, কম বেশি আপনারা জানেন। কিন্ত বাংলায় কিভাবে কিওয়ার্ড রির্সাচ করবেন, রির্সাচ করার সময় কোন কোন বিষয় গুলো অনুসরণ করতে হবে? নিচে আমি ৩টা পদ্ধতি আলোচনা করছি।

বাংলায় কিওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য ২ টা টুলস আছে –

০১। keyword planner
০২। Semscoop.com

০১। keyword planner এ লগইন করার পর, লোকেশান অ্যান্ড ল্যাংগুয়েজ বাংলা করে দিবেন, সেখানে বাংলাই আপনার ধারণা করা কীওয়ার্ড দ্বারা সার্চ দিবেন, তারপর দেখতে পারবেন মাসে কতবার সার্চ হচ্ছে, কম্পিটিটর কেমন।

০২। Semscoop.com থেকেও বাংলা কীওয়ার্ড এর সার্চ ভলিউম জানতে পারবেন। ঠিক লোকেশান টা বাংলাদেশ করে দিবেন, তাহলেই পেয়ে জাবেন অনেক আইডিয়া।

০৩। তাছাড়া আপনি গুগল রিলেটেড কীওয়ার্ড গুলো অবশ্যই সিলেক্ট করতে পারেন। কারণ গুগলে যেই কী ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ হয়ে থাকে, সেগুলোই কিন্ত দেখাই। এই ৩ টা বিষয় অনুসরণ করে যদি কি ওয়ার্ড রির্সাচ করতে পারনে, তাহলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে।

আর একটা কৌশল বলি – সেটা হচ্ছে বাংলাতেই আর্টিকেল লিখেবন, টাইটেল সব বাংলায় দিবেন কিন্ত তার পাশাপাশি যদি ব্রাকেটে ইংলিশে লিখে দিতে পারেন টাইটেলটা এবং ইউআরএল টা ইংলিশে দিতে পারেন। এর ফলে ভালো ট্রাফিক পাওয়ার সম্ভবনা থাকবে। রাঙ্কে আসার সম্ভবনা থাকে খুব বেশি। এমনকি ডোমেইন অথোরিটি বেশি হয়ে গেলে ভালো ভালো ইংলিশ সাইট কেও পিছনে ফেলে দেই।

ব্লগিং কোন ভাষা দিয়ে করলে ভালো ইনকাম করা যায়?

ইতোমধ্যে প্রথমদিকে একটু ধারণা পেয়েছেন। আসলে বর্তমানে সবচেয়ে সেরা ও বৃহৎ সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে গুগল। গুগল সারা বিশ্বের সকল ভাষায় বুঝতে পারে বা গুগলের রোবট ক্রাউলিঙ্ক করতে পারে। গ্লোবাল ভাষা দিয়ে ব্লগিং করলে সবচেয়ে বেশি ইনকাম করা যায়। কারণ ইংলিশ সবাই বুঝতে পারে আর এর সিটিআর ও অনেক বেশি। বর্তমানে যেকেউ লোকাল ভাষা দিয়েও যথেষ্ট ইনকাম করতে পারবে। তাই আপনি ইচ্ছা করলে বাংলা ভাষা দিয়েও ব্লগিং শুরু করতে পারেন।

2 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here