শেয়ার বেচাকেনার পদ্ধতি
শেয়ার বেচাকেনার পদ্ধতি

শেয়ার বাজারে শেয়ার বেচাকেনার পদ্ধতিতে আমরা দুভাগে ভাগ করতে পারি। যথা ০১) আধুনিক পদ্ধিত; ০২) প্রাচীন পদ্ধিত।

০১। আধুনিক পদ্ধতিঃ

অনলাইন পদ্ধতিঃ

এ পদ্ধতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কম্পিউটারের মাধ্যমে শেয়ার বাজারের লেনদেন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। শেয়ার বেচাকেনার জন্য ডাকাডাকি না করে কম্পিউটারের পর্দার মাধ্যমে ব্যবসার কার্যক্রম প্রদর্শিত হয়। ফলে সংশ্লিষ্ট সকলের পক্ষে সহজেই লেনদেনের প্রকৃতি দেখা ও জানা সম্ভব হয়। এ ব্যবস্থায় সাধারণত ক্রেতা – বিক্রেতাগণ শেয়ার বাজারের সদস্য বা দালালদের সাথে যোগাযোগ করে শেয়ার ক্রয় – বিক্রয়ের জন্য যে কোনো একজোণ দালালের খাতায় হিসাব খোলে।

দালাল গ্রাহকের পক্ষে নির্দিষ্ট কমিশনের বিনিময়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্রয় – ব্রিক্রয় কার্য সম্পন্ন করে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গ্রাহকের নিকট হিসাব বিবরণী দাখিল করেন। অতঃপর লেনদেন নিষ্পত্তি হলে হস্তান্তর দলিল সম্পাদনের মাধ্যমে শেয়ার সার্টিফিকেট হস্তান্তর করা হয়। আমাদের দেশের ঢাকা ও চট্টগ্রাম শেয়ার বাজারে বর্তমানে এ পদ্ধতিতেই শেয়ার লেনদেন হয়ে থাকে।

০২। প্রাচীন পদ্ধিতঃ

ডাক প্রথাঃ

শেয়ার লেনদেনের একটি প্রাচীন পদ্ধতি হলো ডাক প্রথা। এ পদ্ধতিতে শেয়ার বাজারের একটি নির্দিষ্ট স্থানে বাজারের কর্মকর্তাগণ মাইকের সামনে বসে পর্যায়ক্রমে শেয়ার বা ঋণপত্র ক্রয় – বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কোম্পানির নামসহ শেয়ার বা ঋণপত্রের চলতি দাম ঘোষণা করে নিলাম ডাকতে থাকে। এরূপ দাকে শেয়ার বাজারের সদস্য বা অনুমোদিত ব্যক্তি জবাব বা দালাল ব্যতীত অন্য কেউ অংশগ্রহণ করতে পারে না। কোনো সাধারণ লোক শেয়ার বেচাকেনা করতে চাইলে তাকে অবশ্যই শেয়ার বাজারের সদস্যের মাধ্যমে করতে হবে।

লেনদেন স্থান প্রথাঃ

ডাক প্রথারই বর্ধিত রুপ এটি। এ প্রথায় একেকটি শ্রেণীর কোম্পানির জন্য আলাদা স্থান নির্ধারণ করে সেখানেসই শ্রেণী কোম্পানির সমূহের শেয়ার কেনাবেচা করা। শেয়ার লেনদেনের প্রক্রিয়াটি পূর্বের মতই ডাক প্রথা য় সম্পন্ন করা হয়।

জবিং প্রথাঃ

ব্রিটিশ শেয়ার বাজার থেকে আগত এ পদ্ধতিতে শেয়ার বাজারকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে জবারদের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচা করা হয়ে থাকে। জবার হলো শেয়ার বাজারে ক্রয় – বিক্রয় প্রতিনিধি। এরা মুনাফার বিনিময়ে নিজ নামে শেয়ার ক্রয় বিক্রয়ের চুক্তি সম্পাদন করতে থাকে। এক্ষেত্রে দালালরা তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কমিশনের বিনিময়ে লেনদেন করে।

দালালদের কাজ হলো বাইরের শেয়ার ক্রেতা – বিক্রেতার সাথে কথা বলে লেনদেনের ভিত্তি তৈরি করে জবারদের সাথে লেনদেন করে। এ ব্যবস্থায় দালালগণ প্রথমে জবারদের নিকট গিয়ে নিজের পছন্দনীয় বা ক্রেতা বা বিক্রেতা পছন্দনীয় শেয়ারের মূল্য জানতে চান। তবে প্রথমে তিনি বলেন না যে, শেয়ার ক্রয় করবেন না কি বিক্রি করবেন। জব্বারগণ দুটি দাম উল্লেখ করেন ক্রয় দাম ও বিক্রি দাম। বিক্রি দামের চেয়ে ক্রয় দাম কম হয়। আর এ পার্থক্যই জবারের লাভ।

জবারের দামটি মনঃপুত হলে তিনি ক্রয় বিক্রয় চুক্রিতে আবদ্ধ হন। এ ধরনের চুক্তি দুরকমের হতে পারে। যেমন নগদ ও আগাম। নগদ চুক্তির ক্ষেত্রে লেনদেন নগদে নিষ্পত্তি হয়। আগাম চুক্তিতে নির্দিষ্ট সময় পর লেনদেন সম্পন্ন করা হয়। সাধারণত ১৫ দিনের মধ্যে আগাম চুক্তির নিস্পত্তির করার বিধান রয়েছে।

তথ্যসুত্রঃ বিবিএ (অনার্স) প্রথম বর্ষের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ব্যবসায়ের প্রবর্ধনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের অধ্যায় থেকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here