ব্যবসা বৃদ্ধির কৌশল
ব্যবসায় সফলতা অর্জনের কৌশল সমূহ

বর্তমান যুগ প্রতিযোগিতার যুগ। এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকলে হলে অবশ্যই দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। আর ব্যবসায় জগতে ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনায় দক্ষতা প্রদর্শন করেই তাকে সাফল্যের চাবিকাঠি হাতের মুঠোয় কব্জা করতে হবে।

ব্যবসায়ীর দক্ষতা মূলত প্রয়োজনের সাথে সঙ্গতি রেখে যথাসময়ে উপযুক্ত ব্যবহার করাকে বোঝায়।
সফলতা অর্জনের জন্য একজন ব্যবসায়ীকে কতিপয় কৌশল অবলম্বন করতে হয়। এসব কৌশলের আলোচনা নিম্নরূপঃ

১। আয় বুঝে ব্যয় করাঃ

সকল ব্যবসায়ীকে সর্বদা আয় বুঝে ব্যয় নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। ব্যবসায়ের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ব্যয় করাই বুদ্ধিমানের কাজ। আর সফলতা হাতের মুঠোয় আনার জন্য তাকে এ কাজটি করতে হবে। আকবর ব্যয় বাড়ানো তা কমানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। ব্যবসায়ের সকল ক্ষেত্রে মিতব্যয়িতা অর্জন করতে পারলেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের সোনারকাঠি হাতে এসে পড়বে।

০২। ভেবে চিন্তে কাজ করাঃ

একজন ব্যবসায়ীকে যে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ এবং কাজ শুরুর প্রাক্কালে সে বিষয়ের উপর ভালো মন্দ সবদিকে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আবেগ-তাড়িত হয়ে আগামী দিনের প্রতি দৃষ্টিপাত না রেখে হাত দিলে তা সুফল অপেক্ষা কুফলই বেশি বয়ে আনবে। এতে প্রতিষ্ঠানের এবং ব্যক্তিগত উভয়ের ক্ষতির পরিমান বৃদ্ধি পাবে।

০৩। সময়ের সদ্ব্যবহারঃ

প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বা ব্যবসায় জগতে সময় অত্যন্ত মূল্যবান। আর ব্যবসায়ের মালিক শ্রমিকের সবারই “সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়” প্রবাদটি মনে রাখা প্রয়োজন। ব্যবসায়ীকে আরু স্মরণ রাখতে হবে, time is money

০৪। আলদা সত্তাঃ

একজন ব্যবসায়ীকে সর্বদা মনে রাখতে হবে যে ব্যবসায়ের একটি প্রথক সত্তা রয়ছে। ব্যবসায়ের লেনদেনকে তার সংসারের খরচের সাথে সংযুক্ত করা হলে সমস্যা এবং বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে। তাই তার ব্যক্তিগত আয় ব্যয় এবং সংসারের আর ব্যয়কে পৃথকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। এরুপ ব্যবস্থা গৃহীত হলে সে বুঝতে পারবে ব্যবসায় তার কিরূপ মুনাফা অর্জিত হচ্ছে।

০৫। নিত্য তদারকিঃ

ব্যবসায়ের সফলতা অর্জনের প্রথম উপকরণ হলো তদারকি। অন্যের উপর সম্পূর্ণ নির্ভর না করে ব্যবসায়ের মালিকেকেই লেনদেন থেকে শুরু করে সব কাজের তদারকি করতে হবে। ব্যবসায়ের আয়তন যাই হোক না কেন, এর গরুতবপূর্ণ কাজগুলো ব্যবসায়ীকে ব্যক্তিগতভাবে পরিদর্শন ও সম্পাদনের দায়িত্ব গ্রহন করতে হবে। কেননা, কর্মচারীদের উপর অধিক নির্ভরশীল যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনায় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

০৬। ব্যবসায়ের কাজকে প্রাধান্য দেয়াঃ

একজন ব্যবসায়ীকে ব্যবসায়ের কাজকে অধিক প্রাধান্য দিতে হবে। তাকে মনে প্রানে ব্যবসা করতে হবে। তার মনোভাব দোদুল্যমান হলে বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সফলতা অর্জন করা দুরুহ হয়ে পড়বে। তাই ব্যক্তিগত অন্যান্য আয়োজন ও কাজের উপর ব্যবসায়ের সবসময় প্রাধান্য দেওয়া প্রয়োজন।

০৭। ব্যক্তিত্ব বজায় রাখতে হবেঃ

একজন ব্যবসায়ীকে সর্বদা আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে হবে। তার কথাবার্তা, আচার আচারন প্রাণবন্ত অথচ উন্নতমানের হতে হবে। যেকোনো সমস্যা বা পরিস্থিতি মোকাবেলার মতো ধৈর্য গুন থাকতে হবে। তবে এসবের মধ্যেও তাকে সর্বদা হাসি খুশি থাকতে হবে। ফলে সাধারন ব্যবসায়ী ও ক্রেতা তার প্রতি আকৃষ্ট হবে খুব সহজেই।

০৮। গোপনীয়তা রক্ষাঃ

ব্যবসায়ের আয়তন ছোট হোক বা বড় হোক এর গোপনীয়তা ব্যবসায়ীকে সর্বদা রক্ষা করে চলতে হবে। এসব গোপনীয়তা বলতে পুঁজির পরিমান, পণ্য ক্রয়ের স্থান, পণ্যের ক্রয়মূল্য, ভবিষ্যৎ কর্মসূচি এবং ব্যবসায়ের বর্তমান অবস্থা প্রভৃতিকে বোঝায়।
একজন ব্যবসায়ীকে উল্লিখিত বৈশিষ্টের অধিকারী হতে হবে। এসব বৈশিষ্টমণ্ডিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গই ব্যবসায়ের সফলতা অর্জন করতে পারবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here