শীতে যে খাবার খাবেন, জানেন কি? এই শীতে শরীর সাস্থ্য ভালো রাখতে চাইলে, শরীরের দুর্বলতা হ্রাস করাসহ আরও বিভিন্ন ধরনের উপকার পেতে, নিচের খাবার গুলো খাওয়া উচিত।
শীতকালে শরীর সুস্থ, সতেজ ও উৎফুল্ল রাখাটা যথেষ্ট কঠিন একটা কাজ। শীতে অনেকে অলসভাবে কাজ করে যার কারণে শরীর ভালো রাখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ মিস হয়ে যায়। ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এ সময় প্রকৃতিগত পরিবর্তনের কারণে ঠান্ডা, কাশি, গলা ব্যথা ও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা একটু মাত্রারিতিক্ত হয়ে থাকে।
তবে যায় করেন না কেন, আপনাকে শীতের সময় নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গুলো খেতে হবে। পুষ্টিকর খাবার বলতে সব খাবার না, মানে হচ্ছে আপনি গরমের জন্য যা খাবেন সেগুলো ছাড়া। অর্থাৎ শীতের জন্যই আলাদা ও বিশেষ খাবার রয়েছে, যা দেহের শক্তি বৃদ্ধি করতে ও বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে বিরাট ভূমিকা রাখে। শরীরের যত্নের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করে শীত উপভোগ করার জন্য অবশ্যই আপনাকে নিচের ৫টি খাবার নিয়মিত খাওয়া উচিত। তাহলে জেনে নিন এই শীতে আপনাকে যে খাবার গুলো অবশ্যই খেতে হবে।
এই শীতে শরীর স্বাস্থ্য ও মন ভালো ও সতেজ রাখতে যে ৫ ধরনের খাবার অবশ্যই আপনাকে খেতে হবে তাঁর তালিকা নিচে বিস্তারিতভাবে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন কেন খাওয়া উচিত, কি কি উপাদান রয়েছে যা শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভূমিকা রাখে।
শীতে যে ৫ ধরনের খাবার নিয়মিত খাবেন
০১। সেদ্ধ ডিম
০২। গাজর
০৩। শাক-সবজি
০৪। খাঁটি মধু
০৫। গ্রিন টি
০১। সেদ্ধ ডিম
শীতে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতে ও তাজা রাখতে সেদ্ধ ডিমের ভূমিকা অনন্য। ডিম পুরো বিশ্বে সবচেয়ে পরিচিত ও জনপ্রিয় একটি খাবার। এটিতে রয়েছে অনেক বিস্ময়কর উপাদান, যা শরীরের জন্য অনেক উপকারি এইজন্যই এটি খুব জনপ্রিয়। ডিমের মধ্যে রয়েছে নয়টি প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো এসিড। ডিমে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন, যেমন—বি২, বি১২, এ ও ই; রয়েছে জিংক, ফসফরাস এবং প্রয়োজনীয় মিনারেল। এবং এতে ক্যালসিয়াম ও আয়রনও আছে পর্যাপ্ত। বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে প্রতিরোধে ডিম যথেষ্ট কার্যকর ভূমিকা রাখে। শীতের খাবার হিসেবে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় তাই ডিম রাখতে পারেন। তবে উপযুক্ত উপকার পেতে অবশ্যই আপনাকে সেদ্ধ করে নিয়মিত সকালে খেতে হবে।
০২। গাজর
শীতকালীন খাবারের মধ্যে গাজর হচ্ছে অন্যতম। গাজর সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় শীতকালীন সময়ে। গাজরকে বলা হয় সুপার ফুড। গাজরে রয়েছে শক্তি, শর্করা, চিনি, খাদ্যে ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিনসমূহ ভিটামিন এ সমতুল্য, বেটা ক্যারোটিন, লুটিন জিজানথেন, থায়ামিন (বি১), রিবোফ্লাভিন (বি২), ন্যায়েসেন (বি৪প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫), ভিটামিন বি৬, ফোলেট (বি৯), ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, চিহ্ন ধাতুসমুহ, ক্যালসিয়াম, লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ , ফসফরাস, পটাশিয়াম, ও সোডিয়াম। এইজন্যই এটির একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবারের মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও গাজরের মধ্যে রয়েছে উচ্চ পরিমাণ বেটা ক্যারোটিন। এটি বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে বিশেষ এক ভূমিকা রাখে। তাই এই শীতে নিয়মিত গাজর খাওয়া উচিত।
গাজর খাওয়ার ১০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানতে এখানে কিল্ক করুন!
০৩। শাক-সবজি
শাক সবজি কে এককথায় শীতের খাবার বলে থাকে। অর্থাৎ শীতের সময় অনেক ধরনের শাক সবজি পাওয়া যায়, যেমনঃ লালশাক, পালং শাক, পুই শাক, পাট শাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের সবজি পাওয়া যায়। শীতের সময় এইগুলো বেশি পরিমাণে খাওয়া প্রয়োজন। কারণ এই শাক সবজি গুলো রয়েছে অনেক ধরনের ভিটামিন, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম সহ আরও কার্যকরী উপাদান। যা শরীর সুস্থ রাখতে, শক্তি বৃদ্ধি করতে, শরীরের গঠন বাড়াতে ও মন সতেজ রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। শীতের সবজিতে আরো রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা পলিস্যাকারাইড নামের শর্করা। সাধারণত হালকা সিদ্ধ সবজিতে পরিপূর্ণ পুষ্টি পাওয়া যায়। তাই শীতের পুরোটা সময় ধরে শাক সবজি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে যেহেতু এইসব কিছুই তখন পর্যাপ্ত পাপ্য থাকে।
০৪। খাঁটি মধু
শীতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার হচ্ছে খাঁটি মধু। অর্থাৎ শীতের সময় দেহ কে সুস্থ ও ভালো রাখতে মধুর ভূমিকা অনন্য। এটি অনেক ধরনের রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। এবং এর প্রয়োজনীয়তা দেখে প্রায় সব ডাক্তাররাই বলেছেন নিয়মিত মধু খাওয়ার জন্য। বিশেষ করে শীতকালে হচ্ছে উপযুক্ত খাওয়ার সময়। জ্বর ও ঠান্ডা প্রতিরোধে মধু সবচেয়ে নিরাপদ খাবার। শীতের খাবার হিসেবে তো মধুর কোন জুড়িই নেই। মধুর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। এটি ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে। ঘুমানোর আগে বা সকালের নাশতার সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। ভালো হয় এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলেও।
০৫। গ্রিন টি
গ্রিন টির মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। শীতের দিনে দুই থেকে তিন কাপ গ্রিন টি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে।