আবেগ দিয়ে নয় বাস্তবতা দিয়ে ভালবাসুন
আবেগ দিয়ে নয় বাস্তবতা দিয়ে ভালবাসুন

আমরা অনেকেই ‘আবেগ ও বাস্তবতা’ বিষয়টা ভালোভাবে না বুঝেই অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে নেই। যা বর্তমানে সময়ের জন্য ঠিক নয়, আপনাকে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া লাগতে পারে। আসলে আবেগ দিয়ে নয় বাস্তবতা দিয়ে মানুষকে ভালোবাসুন।

প্রকৃত ভালোবাসা আবেগ দ্বারা হয় না, আবেগ দ্বারা ভালোবাসা কখনও সুখ বয়ে আনে না। বর্তমানে আবেগ দিয়ে এই পৃথিবী চলে না, বাস্তবতা দিয়ে চলে সেই বাস্তবতা অনেক কঠিন। আবেগ দিয়ে নয় বিবেক দিয়ে কথা দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করুন সবসময়। যার ফলে আপনার জীবন তা সহজ হয়ে যাবে।

আবেগ কি?

আবেগ-কে সংজ্ঞায়িত করা কঠিন। আবেগকে অনেকে অনুভূতির সমার্থক ধরে নেয়। যদিও অনুভূতি শারিরীক/মানসিক দুইই হতে পারে, আবেগ মূলতঃ মানসিক। এটা এমন একটি মানসিক অবস্থা যা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই উদ্ভূত হয়; সচেতন উদ্যম থেকে নয়। এর সাথে মাঝে মাঝে শারিরীক পরিবর্তনও প্রকাশ পায়। সেক্ষেত্রে আবেগকে বলা যায় অনুভূতির উৎস। আবার শারীরিক ভাবে বলতে গেলে মসৃণ পেশী এবং বিভিন্ন গ্রন্থির কারনে শরীরের অন্তর্নিহিত পরিবর্তনই হল আবেগ ৷ সামগ্রিকভাবে, চেতনার যে অংশ অনুভূতি বা সংবেদনশীলতার সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত তাকে আবেগ বলা যায়। (তথ্যসুত্রঃ উকিপিডিয়া)

বাস্তবতা কি?

বাস্তবতা হচ্ছে সব কিছুর সমষ্টি যা বাস্তব, যা নিছক কল্পনার বিরোধীতা করে।এছাড়াও শব্দটি সত্তাতাত্ত্বিক জিনিসের অবস্থা, অস্তিত্ব নির্দেশ করে।ভৌত অর্থে, বাস্তবতা হচ্ছে জানা-অজানা সব কিছুর সমষ্টি। প্রকৃত বাস্তবতা বা অস্তিত্ব বা সত্ত্বা সম্পর্কে দার্শনিক প্রশ্ন সত্তাতাত্ত্বিক বিধির আওতায় বিবেচনা করে, যা পাশ্চাত্য দার্শনিকদের অধিবিদ্যার একটি প্রধান শাখা। জগতে যার অস্তিত্ব আছে তাই বাস্তব, জগতে যা বাস্তব তা-ই হলো বাস্তবতা।

আবেগ দিয়ে নয় বাস্তবতা দিয়ে ভালোবাসুন

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দূরত্ব কোনটি জানো। জীবন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত। নাহ, বোধ হয় উত্তরটা সঠিক হয়নি। সবচেয়ে বড় দূরত্ব হলো, যখন আমি তোমার সামনে থাকি কিন্তু তুমি বুঝতে পারো না, যে তোমাকে আমি কতটা ভালবাসি। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, আমি তোমাকে অসংখ্য ভাবে ভালবেসেছি, অসংখ্যবার ভালবেসেছি, এক জীবনের পর অন্য জীবনেও ভালবেসেছি, বছরের পর বছর, সর্বদা, সবসময়।

ভালবাসা শব্দের অর্থটা খুবই ব্যতিক্রম। ভালবাসা শব্দটা অনেক জায়গাই অনেক ভাবে ব্যবহার করা যায়। অপরদিকে ভালোবাসার মধ্যেই নিহিত থাকে আবেগ ও বাস্তবতা। যেই ভালবাসা সবচেয়ে বেশি প্রচলিত, সেই ভালবাসা সর্ম্পকে আমার কিছু কথা মেয়ে ছেলেকে, ছেলে মেয়েকে ভালবাসতেই পারে। অর্থাৎ কাউকে ভালবাসাটা দোষের নয়, অন্যায় নয়। অন্যায় হচ্ছে কাউকে ভালবেসে আপন না করা। এখন অনেক ছেলে মেয়ে পাওয়া যাবে, যারা নাকি ভালবাসা নিয়ে খেলা করে, তারা মনে করে এইটা টাইম পাস করার বিশেষ পদ্ধতি, মজা ও আনন্দ করার একটা মাধ্যম।

আসলে, তারা ভালবাসার মর্ম বুঝে না, এবং জানে না প্রকৃত ভালবাসার সংজ্ঞা। আবার, কোনো মেয়েরা বা ছেলেরা সৌন্দর্য দেখে প্রেমে পড়ে এবং একে অপরকে ভালোবেসে থাকে। সেইটাকে ও ভালবাসা দাবি করা যাই। কিন্তু, এইটা প্রকৃত ভালবাসা নয়। কারণ আবেগ দ্বারা কোনো ভালবাসা হই না। সেই জন্যই এই ভালবাসা বেশিদিন স্থায়ী থাকে না। ভালবাসা আবেগ দ্বারা পরিচালিত নই। প্রকৃত ভালবাসা বাস্তবতা দ্বারা পরিচালিত। আর বাস্তবতা হচ্ছে সুন্দর দেখে ভালবাসা নই, সুন্দর একটা মন দেখে ভালবাসা। বাস্তবতা বিবেচনা করে একে অপরকে ভালবাসুন তাহলে এই ভালোবাসা হবে দীর্ঘস্থায়ী।

বিখ্যাত কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও এই বিষয়ে একটি উক্তি করেছিলেন, ভালোবাসা হলো একমাত্র বাস্তবতা, এটি শুধুমাত্র আবেগ দিয়ে নিয়ন্ত্রিত নয়। এটি হলো একটি চিরন্তন সত্য যা যেই হৃদয়ে সৃষ্টি হয়, সেই হৃদয়ে থাকে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে,, কিছু ছেলে মেয়েরা ভালবাসার মর্ম বুঝাতে গিয়ে, নিজের বাবা মা কেই ভুলে যায়, তাদের কে দূরে ফেলে দেয়। আমি মনে করি, এইটাতো প্রকৃত ভালবাসার কাছে ও যাই না, বরং তাদের মতো অকৃতজ্ঞ আর কেউ নেই।

পৃথিবীর সবচেয়ে কষ্ট হচ্ছে কাউকে আপন করে পর করে দেওয়া। এটা সেই বুঝতে পারে, যে নাকি আপন মানুষ দ্বারা কষ্ট পাই। আর সেখানেও দেখবেন আবেগ দ্বারা এক অপরকে চেয়েছিল। তাই আমাদের চেষ্টা করা উচিত, আবেগ দিয়ে প্রেমে না পড়ার, আর যদি প্রেম করতেই হয়, কাউকে ভালবাসতেই হয়, তাহলে বাস্তবতা দিয়ে ভালোবাসা। যেন প্রিয় মানুষটাকে পুরো জীবনের জন্য পাওয়া যায়। তবে, তার চেয়েও শত শত গুণ বাবা- মাকে ভালোবাসা ও সম্মান করা উচিত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here