সুখী থাকার উপায়
জীবনে সুখী থাকার ১০টি কার্যকরী উপায়

জীবনে সুখী থাকার ১০টি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে জানতে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। বাস্তব জীবনে আমরা অনেকেই হতাশার মধ্যে থাকি, চারদিকে সমস্যা যেনো বেড়েই চলছে কোন সমাধান করতে পারছি না, তাহলে সুখে থাকবোই বা কি করে এমন প্রশ্ন করে থাকি? তাহলে জেনে নিন উপায় গুলো –

০১। সর্বদা ইতিবাচক চিন্তা করুনঃ

আপনি ততক্ষণ পর্যন্ত দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না ইতিবাচক চিন্তা করবেন। অর্থাৎ সুখী হওয়ার অন্যতম ও প্রধান ধাপই হচ্ছে সর্বদা ইতিবাচক চিন্তা করা। প্রতিদিন আপনি অনেক মানুষের সালে চলাচল করছেন, এক এক ধরনের মানুষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন কথা শুনছেন। আপনি অফিসে গেলেন সেখানেও অনেক ধরনের কথা শুনতে পারেন, বস রাগের বসে কিছু কথা বলে ফেলতে পারে।

এরজন্য আপনি অবশ্যই কাজের নেতিবাচক চিন্তা করা ঠিক হবে না, অবশ্যই ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে। কারণ নেতিবাচক চিন্তার অনেক কুফল রয়েছে, যদি অফিসের বস জানতে পারে আপনি নেতিবাচক চিন্তা করছেন তাকে বা তার কাজকে নিয়ে, তাহলে অফিস থেকে বের করে দেওয়াটাই স্বাভাবিক। ঠিক প্রতিটা কাজেই ইতিবাচক চিন্তা করা উচিত। যদি নেতিবাচক চিন্তা করেন তাহলে বিষয়টা নিয়ে সর্বদা উতগিন্ন থাকবেন, দুশ্চিন্তায় ভুগবেন, রাতে ঘুম আসবে না ও আরও সমস্যা হতে পারে।

০২। নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খান।

সুখী হওয়ার উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। হাঁ শরীর স্বাস্থ্য যদি ভালো না থাকে, তাহলে ভালো কিচ উপার্জন করো সুখ করতে পারবেন না। শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার অন্যতম উপায় হচ্ছে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া।

০৩। নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা না করা।

আজকে থেকেই নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করা বাদ দিন। নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করলে আপনি হতাশায়গ্রস্ত হয়ে যাবেন, নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করলে আপনি পিছিয়ে পরবেন, নিজেকে অনেক ছোট মনে হবে। যা আপনার লক্ষ্যের দিকে স্থিরভাবে থাকতে দিবে না। তাই নিজেকে অন্যের মতো নয়, নিজের মতো করে সঠিক ও সুন্দরভাবে ভালো লাগার জিনিস গুলোর সাথে সময় দিয়ে কাটান। তবে হ্যাঁ, এইটা সত্য যে অন্যদের থেকে আপনি শিখতে পারবেন। ভালো মানুষ থেকে ভালো কিছু শিখা উচিত। বড় মানুষদের সঠিক ও সৎ পরামর্শ গুলো গ্রহণ করা উচিত।

০৪। দুশ্চিন্তা বা নেতিবাচক চিন্তা বাদ দিন।

দুশ্চিন্তা বা নেতিবাচক চিন্তা কখনো সুখ ও কল্যাণ বয়ে আনে না। অতিরিক্ত নেতিবাচক চিন্তা আপনাকে কখনো বড় হতে দিবে না, এবং দিন দিন মানসিক শক্তিকে দুর্বল ও অসুস্থ করে দিবে। ছোট খাটো চাপ নিতেও হিমশিম খেতে হয়, যা জীবনের স্বাভাবিক গুণগত মান ব্যাহত করে। জীবনে ভালো কিছু করতে হলে, সর্বদা সবাইকে নিয়ে সুখী থাকতে হলে অবশ্যই আপনাকে দুশ্চিন্তা বা নেতিবাচক চিন্তা বাদ দিতে হবে।

০৫। সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত ঘুমানো উচিত।

আমাদের সকল চিন্তা ভাবনা ব্রেইনের উপর প্রভাব ফেলে। তাই সেই ব্রেইনকেই যদি সুস্থ্য না রাখেন তাহলে আপনার চিন্তাভবনা কোন কার্যকরী ফল দিতে পারবে না। ব্রেইনকে সুস্থ রাখার জন্য প্রথমত পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং দ্বিতীয়ত সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। আমরা ভালো খাবার খেলেও ঘুমের প্রতি অনেক অবহেলা করি, সঠিক সময়ে ঘুমাতে যায় না, ঘুমানোর সময় কাজে ব্যস্ত থাকি। যা শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে বিশেষ করে ব্রেইনের উপর চাপ বেড়ে যায়। স্মৃতিশক্তি কমে যায়।

০৬। নিজের মতো সবাইকে ভালোবাসুন।

আমরা কখনই কি নিজের মতো অন্যদেরকে ও ভালোবাসি, কয়জনই বা ভালোবাসি? যদি নিজের মতো সবাইকে সমানভাবে ভালোবাসতেন তাহলে আর এত সমস্যা আমাদের মাঝে থাকতো না। নিজের প্রতি অহংকার, অন্যের প্রতি হিংসা বিদ্বেষ থাকতো না। যাদের মনে যত সমস্যা থাকবে, তারা তত অসুখী হবে এটাই স্বাভাবিক। নিজের মতো অন্যদেরকে ভালোবাসার চোখে দেখলে এর মধ্যে অন্যরকম শান্তি পাওয়া যায়।

০৭। সবার সাথে ভালো ব্যবহার করুন।

আপনার একটা ভালো ব্যবহারই অনেক সুখী রাখতে পারে। সবধরনের মানুষের সাথে মিলেমিশে থাকার ও ভালো ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। জীবনে কে কোথায় কাজে লাগবে আপনি কিন্ত জানেন না তাই সবার সাথে ভালো ব্যবহার করুন। কাউকে ছোট ভাবা যাবে না ছোটও একদিন অনেক বড় হয়ে যাবে। আর আপনি এইটাও জানেন কখন আপনার কার সাহায্য দরকার হলে পারে। তাই সবার সাথে ভালোভাবে থাকার চেষ্টা করুন, বিপদে মানুষদেরকে সাহায্য করার চেষ্টা করুন, দেখবেন আপনারও সাহায্য দরকার হলে তারা এগিয়ে আসবে।

০৮। নিজের পরিবারকে যথেষ্ট সময় দিন।

নিজের পরিবারকে সময় দেওয়ার চেষ্টা করুন, পরিবারের সদস্যদের সাথে সুন্দর অসাধারণ মুহূর্ত কাটান, ঘুরতে নিয়ে যান। পরিবারের সঙ্গে ঘুরার মাঝে রয়েছে অন্যরকম শান্তি যা আর কোথায় পাবেন না। তাই প্রকৃত সুখের জন্য নিজের পরিবারকে সময় দিতে ভুলবেন না।

০৯। কঠোর পরিশ্রমি হওয়ার চেষ্টা করুন।

পরিশ্রম ছাড়া কিছুই অর্জন সম্ভব নয়। ভালো কিছু শিখতে হলে, জানতে হলে, অর্জন করতে হলে এবং নিজেকে উচ্চ পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে কঠোর পরিশ্রম ছাড়া কোন উপায় নেই। যে যত বেশি কঠোর পরিশ্রমি সে তত বেশি সফল, আর যে সফল হবে সে সুখী থাকাটাই স্বাভাবিক। এখন পর্যন্ত যত বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক দেখছেন, যারা কিংবদন্তি হিসেবে বেঁচে আছেন, তারা সবাই দিনের পর দিন রাতের পর পর পরিশ্রম করে সফলতা পেয়েছেন উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পেরেছেন। সঠিক, সৎ ও পজিটিভ পরিশ্রম জীবনে সুখ ও কল্যাণ বয়ে আনে।

১০। সম্মান ও আত্মমর্যাদা বজায় রাখুন।

অনেক কিছু অর্জনের পর আপনি উচ্চ পর্যায়ে গিয়েছেন, যথেষ্ট সম্মানিত হয়েছেন ভালো কথা, কিন্ত আপনাকে এইগুলো ধরে রাখতে হবে। সুখী থাকার জন্য অবশ্যই আপনাকে সম্মান ও আত্মমর্যাদা বজায় রাখতে হবে সবসময়। সম্মান ও আত্মমর্যাদা ঠিক না থাকলে সাধারণ মানুষের ভালোবাসা থাকবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here