তুলসী পাতার উপকারিতা
তুলসী পাতার উপকারিতা

তুলসীপাতার রয়েছে অনেক কার্যকর উপকারিতা। আয়ুর্বেদিক মতে তুলসীপাতা বিভিন্ন ব্যাধি ভালো করতে সাহায্য করে। এটি ব্যবহারে কোন ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। যখন ইচ্ছা যতগুলি ইচ্ছা কাঁচাপাতা চিবিয়ে খাওয়া যায়।
বনৌষধির মধ্যে তুলসী সর্বোৎকৃষ্ট বলে স্বীকার করা হয়েছে। এবং মেটেরিয়া মেডিকা তে এই গাছকে সর্বোচ্চ স্থান দেওয়া হয়েছে।

তুলসীপাতার উপকারিতা

০১। কার্ত্তিক মাসে প্রতিদিন প্রাতঃকালে দু-তিনটি করে তুলসী পাতা খালিপেটে চিবিয়ে খেলে পুরো বছর কোন প্রকারের রোগ হওয়ার বেশি সম্ভবনা থাকবে না। কার্ত্তিক মাসে আবহাওয়ায় তুলসীপাতার প্রয়োগ সর্বদা দেহকে নীরোগ রাখে।

০২। তুলসীপাতার রস নিয়ে মারিশ করলে হাড় শক্ত হয়, দেহ কান্তিময় হয়, দেহকে নীরোগ রাখে। সাবান, তেল ক্রিম প্রভৃতির স্থলে তুলসীর রস প্রয়োগ করলে নানা প্রকার দৈহিক সুস্থতা লাভ হয়।

০৩। তুলসীপাতা চিবালে দাঁতে পোকা থাকে না। এবং দাঁতকে আরও সুন্দর উজ্জ্বল মজবুত এবং দাতের আয়ু ব্রদ্ধি হয়। দাঁতের যন্ত্রণা খুবই কষ্টদায়ক। দাঁতের যন্ত্রণা হলে তুলসীপাতা ও কালো মরিচ পেষণে করে বটিকা তৈরি করতে হবে এবং যে দাঁতে যন্ত্রণা হচ্ছে, তার তলায় চেপে রাখলে দাঁতের যন্ত্রণা কমে যাবে। এবং তুলসীপাতার রসের সাথে কর্পুর মিশিয়ে তাতে তুলো ভিজিয়ে তাদের গোঁড়ায় রাখতে হবে।

০৪। চক্ষু উঠা সমাধন করতে সাহায্য করে। চোখ উঠা একটি সংক্রামক রোগ। ঠাণ্ডা – গরমে ঘোরাফেরার ফলে এই রোগ হয়ে থাকে। এই অবস্থায় তুলসীপাতার রস চোখে কাজলের মতো লাগালে হবে অথবা তুলসীপাতার রসে সামান্য মধু মিশিয়ে চক্ষুতে এক এক ফোটা দিতে হবে। এইবাবে দিলে চক্ষু উঠা, চোখে পানি পড়া প্রভৃতি আরোগ্য হয়।

০৫। পেট পরিস্কার অর্থাৎ পায়খানা পরিস্কার না হলে, গলার মধ্যেও তার প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, কাশি এবং সেই সাথে মাথা ভার হয়ে থাকে। এই অবস্থায় ২০ গ্রাম তুলসী পাতার সঙ্গে ৫০ গ্রাম গোলাপি ফিটকিরি চূর্ণ করে একটি মটরের মতো বটিকা তৈরি করে চায়াতে শুষ্ক করে নিতে হবে। এবার এক একটি বটিকা সকালে ও সন্ধ্যায় পানসহ সেবনে কোষ্ঠবদ্ধতা, পায়খানার কষ্ট দূর হয়ে যাবে।

০৬। দেহের রক্ত কমে গেলে জন্ডিস হয়। সারা দেহ হলুদবর্ন হয়ে যাবে। একে ন্যাবা ও ইংরেজিতে জন্ডিস রোগ বলে। মুলো ও তুলসী রক্তসল্পতা দূর করতে বিরাট সাহায্য করে। তুলসির রস ১০০ গ্রাম এবং মুলোর রস ৫০ গ্রাম একত্রে মিশিয়ে, তাতে গুড় মিশিয়ে খেলে আরোগ্য হয়। একমাস পর্যন্ত প্রত্যহ দিনের বেলা তিন বার খেতে হবে। তুলসীপাতা ৩ গ্রাম পুনর্নবার মূল ৩ গ্রাম, দুটি একত্রে পেষণ করে ৫০ গ্রাম পানিতে গুনে সেবন করতে হবে। দেহে রক্তস্বল্পতার জন্য হলদে হলে তা দূর করতে ভুমিকা রাখবে এবং শরীর ও ভালো হবে।

০৭। যৌবন স্থিরীকরণে তুলসীপাতার রয়েছে অসাধারণ উপকার। পিপুলের মূল ২০ ও সমান মাত্রায় অশ্বগন্ধা, তোপচিনিম তাল মাখানা, নাগকেশর নিয়ে ১০০ গ্রাম তুলসীপাতার সাথে সব একত্রে পেষণ করে, ২৫০ গ্রাম মধু মিশিয়ে আধ কিলো চিনি দিয়ে চাটনি তৈরি করে ঠাণ্ডা করতে হবে, এবার ওতে সব দিয়ে মিশিয়ে জয়ত্রী, ছোট এলাচ ও কেশর দশ গ্রাম পরিমাণে প্রত্যেকটি নিয়ে পেষণ করতে হবে। এটি হলো তুলসীর টনিক। শীতের দিনে প্রত্যহ ১০ গ্রাম সকালে খেতে পারলে ঈষদুষ্ণ গরম দুধ খেলে যৌবন দীর্ঘস্থায়ী হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here