উচ্চ রক্তচাপ কি এর প্রকারভেদ ও লক্ষণ সমূহ
উচ্চ রক্তচাপ কি এর প্রকারভেদ ও লক্ষণ সমূহ

উচ্চ রক্তচাপ বর্তমানে বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। সারা বিশ্বে এখন প্রায় ১৫০ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। শরীরের জন্য উচ্চ রক্তচাপ একটি ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান।

সবাইকে উচ্চ রক্তচাপ সম্পরকে বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করা, এ ব্যপারে সচেতন করা, প্রতিরোধমূলক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং এর জটিলতা ও চিকিৎসা সম্পর্কে অবহিত করাই বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবসের উদ্দেশ্য। তাই প্রতি বছর ১৭মে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস উদযাপন করা হয়।

উচ্চ রক্তচাপ কি?

শরীর ও মনের স্বাভাবিক অবস্থায় রক্তচাপ যদি বয়সের জন্য নির্ধারিত মাত্রার উপরে অবস্থান করতে থাকলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলে। একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রে যখন সিস্টোলিক রক্তচাপ ১৪০ মি মি পারদ চাপের এবং ডায়াস্টোলিকের রক্তচাপ ৯০ মি মি পারদ চাপের বেশি হলে উচ্চ রক্তচাপ চিহ্নিত করা হয়।

বয়স ও লিঙ্গ ভেদে রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রার বেশি হলে উচ্চ রক্তচাপ এবং কম হলে নিম্ন রক্ত চাপ বলে। তবে হঠাৎ করে সাধারণ নিয়মের অতিরিক্ত রক্তচাপ বাড়লেই তাকে উচ্চ রক্তচাপ হিসেবে ধরা যাবে না। রাতে ভালো ও পরমিত ঘুমের পর যদি ভোরে বিছানায় শোয়া অবস্থায় পরপর তিন দিন রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রার বেশি পাওয়া যায় তখন তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলা যাবে।

কারণ অতিরিক্ত চিন্তা, পরিশ্রম, মানসিক আশান্তিতে বা উত্তেজনার কারণে ক্ষণিকের জন্য সিটোলিক রক্তচাপ বাড়তে পারে। কিন্ত ডায়াস্টলিক রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রার অতিরিক্ত হওয়া মানেই রোগীর উচ্চ রক্তচাপ হয়েছে। এটি কোন রোগ নয়, বরং এটি অন্য কিছুর রোগের উপসর্গ।

উচ্চ রক্তচাপের প্রকারভেদঃ

উচ্চ রক্তচাপ প্রধানত ৪ প্রকারঃ

১। সিস্টোলিক রক্তচাপঃ সীমা – ১০০ থেকে ১৪০ মিমি পারদ, গড় ১২০ মিমি পারদ।
২। ডায়াস্টোলিক রক্তচাপঃ সীমা – ৬০ থেকে ৯০ মিমি পারদ, গড় ৮০ মিমি পারদ।
৩। পালস রক্তচাপঃ সীমা – ৩০ থেকে ৪০ মিমি পারদ।
৪। গড় রক্তচাপঃ সীমা ৭৮ থেকে ৯৮ মিমি পারদ।

কারণগত রক্তচাপঃ

০১। প্রাইমারি উচ্চ রক্তচাপঃ

যেকোনো রোগের অনুপস্থিতিতে এ ধরনের রক্তচাপ দেখা যায়। ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কোন কারণ খুজে পাওয়া যায় না। একে প্রাইমারি উচ্চ রক্তচাপ বলে। এই প্রাইমারি উচ্চ রক্তচাপের জন্য কিছু নিয়ামিকের ভুমিকা রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এগুলো জেনেটিক কারণ অথবা পারিবারিক উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস ও স্থুল ও মেদবহুল শরীর, ধূমপান, বেশি লবণ খাওয়া বেশি অ্যালকোহল সেবন প্রভৃতি।

০২। সেকেন্ডারি উচ্চ রক্তচাপঃ

রোগের উপস্থিতির কারণে এই রক্তচাপ হয়ে থাকে। যেমন – কিডনি জনিতরোগ, হরমোন গ্রন্থিজনিতরোগ, রক্তনালীর জন্মগত ত্রুটি, গর্ভধারন জনিত জটিলতা এবং দির্ঘদিন বিশেষ কোনো ওষুধ সেবন, যেমন – জন্মনিয়ন্ত্রণের ট্যাবলেট, স্টেরয়েড, লবণযুক্ত কোন ওষুধ, অ্যালকোহল, গর্ভাবস্থা, বৃক্ক সম্পর্কিত রোগ, অন্তক্ষরা, গ্রন্তিজনিত রোগ, হৃদরোগ ইত্যাদি। উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ সকালে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মাথাব্যথা, ঘাড় ব্যথা, দুচোখে দেখতে অসুবিধা হওয়া বা চোখে ঝাপসা দেখা, রাতে ঘুমাতে না পারা, সবসময় খিটখিটে মেজাজ।

উচ্চ রক্তচাপের ফলে যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয়

স্ট্রোক, হাইপারটেনসিভ, এনসেফালোপ্যাথি, পাবালাইসিস, মস্তিষ্কের জটিলতা। হৃদজনের জঠিলতা হৃদপিণ্ড, বড় হয়ে যাওয়া, হার্ট অ্যাটাক ও ফেইলিউর, কবোনারি, হার্ট ডিজিজ, প্রভৃতি রেচনতন্ত্রের জটিলতা বৃক্কেব কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া, প্রস্রাবের সঙ্গে প্রোটিন বেরিয়ে যাওয়া রেনাল ফেইলর প্রভৃতি।
চোখের রেটিনায় জটিলতা হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি, দৃষ্টশক্তির ব্যাঘাত, প্যাপিলিওডিমা ইত্যাদি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here