সকালের নাস্তা
সকালের নাস্তায় কি খাওয়া উচিত

নিয়মিত সকালে নাস্তা করা একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস। সকালের নাস্তা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সকালের ভালো নাস্তায় কিন্ত সারাদিনের পুষ্টিকে নিশ্চিত করবে। সকালে সঠিকভাবে পুষ্টিকর নাস্তা খেলে এ্যাসিডিটির দূর হয় ও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

সকালের নাস্তা না খেলে অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। যদি একটা ছাত্র সকালে পুষ্টিকর খাবার না খেয়েই স্কুলে চলে যায়, তাহলে ২/৩ টা ক্লাস করার অনেক ক্লান চলে আসবে। পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারবে না, অর্থাৎ দেহের শক্তি কমে গেলে সবকিছুই বিরক্তি লাগবে।

আবার যারা অফিসে কাজ করে, তারা যদি না সকালের নাস্তা না খেয়ে বের হয়, তাহলে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারবে না। শরীর ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে, মন মানসিকতা ও নষ্ট হয়ে যাবে।

সেইজন্য সকালের নাস্তা কিন্ত প্রতিটি মানুষের জন্য অনেক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয়। আর সেই নাস্তাটি হতে হবে এমন, যেখানে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ন্যাচারাল ফ্যাট, সবরকম ভিটামিনস ও মিনারেলসহ নানান পুষ্টিকর উপাদান থাকবে।

সকালে নাস্তা খাওয়ার উপকারিতা

• ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
• শরীরের শক্তি যোগায় সহায়তা করে।
• সারাদিনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
• ব্রেইন সতেজ ও সুস্থ রাখে।
• শরীরের বিপাকীয় ক্ষমতা ঠিক রাখে।
• শারীরিক এবং মানসিক ক্ষমতা কমায় ।
• বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

সকালের নাস্তায় কি রাখা উচিত?

০১। ডিমঃ

সকালের ডিম হতে পারে আপনার অন্যতম ও কার্যকরী খাবার। ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা আছে। সেদ্ধ ডিম খেতে পারলে, ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং শরীরে শক্তি যোগাতে ও যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। ডিমের কুসুমে থাকে ভিটামিন বি ১২ ও প্রোটিন যা আপনার মাংশপেশী কাজ ও শরীরের ফ্যাট ভাঙ্গার জন্য কাজ করে।

০২। আটার রুটিঃ

সকালের নাস্তার জন্য বেশ ভালো একটি খাবার হচ্ছে আটার রুটি। বিশেষ করে যারা ভারী খাবার পছন্দ করেন। রুটি বেশ ভালো এনার্জি সরবরাহ করে আমাদের দেহে যা পুরো দিনই রাখবে সতেজ।

বাংলাদেশের প্রায় অনেকেই সকালে রুটি খেয়ে থাকি। তবে অনেকেই ময়দা রুটি একটু বেশি খেয়ে থাকি। মনে রাখবেন, সকালের নাস্তা পরিমাণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক তেমনি সাস্থ্যকর হওয়ার ও জরুরি বিষয়। সাদা আটার রুটির তুলনায় লাল আটার রুটি বেশি পুষ্টিকর। তবে দুইটা মিশিয়ে ও খেতে পারেন। কিন্ত তেলেবাজা পরটা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। রুটির সাথে চলমান ঋতুর সবজি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। অনেকেই রুটির সাথে আলু ভাজি খাওয়ার চেষ্টা করে। যেইটা একদমই ভুল খাবার, অনেক বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা মনে করেন রুটির সাথে ভালো সবজি খাওয়া আলু ভাজির চেয়ে অনেক গুন ভালো।

০৩। মৌসুমি ফলঃ

সকালের নাস্তা পুষ্টিকর মৌসুমি ফলমূল দিয়ে শুরু করতে পারেন। যেমনঃ কলা, আপেল, কমলা, খেজুর, আঙুর, স্ট্রবেরি অথবা বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফলমূল খেতে পারেন। এর ফলে আপনার শরীর থাকবে সুস্থ, সবল ও শক্তিশালী। ফল খেলে দেহে অনেক এনার্জি বৃদ্ধি পায় ও বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তবে ঘুম থেকে উঠেই সাথে সাথে খাওয়া যাবে না। ঘুম থেকে উঠার পর প্রথমেই ১ গ্লাস পানি খেয়ে নিবেন, তারপর সামান্য কিছু বারি খাবারের পর ফলমূল খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

০৪। খিচুড়িঃ

আমাদের দেশের প্রায় অধিকাংশ মানুষই সকালে ভাত খেয়ে থাকে। কিন্ত আপনি চাইলে খিচুড়ি ও খেতে পারেন, এটি ভাতের চেয়ে অনেক রুচিশীল। যার ফলে পর্যাপ্ত খেতে পারবেন। সারারাত ঘুমানোর ফলে শরীর থেকে অনেক এনার্জি কমে যায়, দুর্বলতা দেখা দেয়। এক প্লেইট খিচুড়ির মাধ্যমে সবকিছু দূর করা যাবে। তাছাড়া যাদের মোটা হওয়ার ইচ্ছা তাদের উচিত সকালে খিচুড়ি দিয়ে শুরু করা।

০৫। চা

সকালে সব খাবারের পর এক কাপ চা খেতে পারেন। চা শরীরকে সতেজ করতে সাহায্য করে। এটি ওজন হ্রাস করতে ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। ব্রেকফাস্টে শেষ খাবার হিসেবে চা রাখাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এর সবচেয়ে কার্যকরী উপকারি হচ্ছে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। তাই শরীর ও মনকে সতেজ করার জন্য, একটু রিলাক্স থাকার জন্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ স্টেস কমাতে এক কাপ লাল চা খেতে পারেন।

আরও জানুন –

২০টি শাক সবজির গুণাগুণ ও উপকারিতা

পড়ার সময় ঘুম তাড়ানোর সহজ ৫টি উপায়

সকালে খালি পেটে কি খাবেন ও কি খাবেন না

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here