ধূমপান ছাড়ার উপায়
ধূমপান ছাড়ার উপায়

ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, জানার পরও আমরা প্রতিনিয়ত ধূমপান করছি। বর্তমানে এইটা সবার কাছে ট্রেন্ড হয়েগেছে বললেই চলে। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে কৃষক শ্রমিকরাও সিগারেট ছাড়া আড্ডা দেয় না।

কম বেশী সবাই তো জানি ধূমপান ক্যান্সার সৃষ্টি করে এবং সিগারেটের প্যাকেটের মধ্যে ও কিন্ত লেখা থাকে তারপরেও আমরা ধূমপান ছাড়ছি না। কারণ আমরা প্রতক্ষ্যভাবে এর ক্ষতিটা বুঝতে পারি না। প্রতক্ষ্যভাবে ক্ষতি না হলেও পরোক্ষভাবে অনেক ক্ষতি হয় যা বলার অপেক্ষা রাখে না। শরীর স্বাস্থ্য খারাপ করে না শুধু অতিরিক্ত ধূমপান মৃত্যর দিকে ধাবিত করে।

ধূমপান ছাড়ার ১০টি উপায়

০১। প্রথমে সিদ্ধান্ত নিন কেন ধূমপান ছাড়া আপনার জরুরী। অর্থাৎ কি কারনে ধূমপান ছাড়তে চান, এটি আপনাকে কি কি ক্ষতি করছে? যেমনঃ ক্যান্সার ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে। আপনি যদি বুঝতে পারেন যে এটি আপনাকে যথেষ্ট ক্ষতি করছে, এবং এই ক্ষতি আপনাকে মৃত্যর দিকে ধাবিত করছে। তাহলে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা আসবে, কারণ কেউ মরতে চাই না।

০২। নিয়মিত ৩ থেকে ৪ লিটার পানি পান করুন। পর্যাপ্ত বিশুধ পানি খেলে শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর হয়ে যায়। এটি ধূমপান থেকে মুক্তি দিতে সরাসরি সাহায্য করে। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং শরীর থেকে নিকোটিনের প্রভাব কাটতে থাকে। যখনই ধূমপানের ইচ্ছা হবে, তখনই ১-২ গ্লাস পানি পান করুন।

০৩। কোন ধরনের থেরাপি বা মেডিটেশন ছাড়া ধুমপান ছাড়া ঠিক নয়। কারণ সিগারেটের নিকোটিনের উপর ব্রেইন অনেক ক্ষেত্রে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ছেড়ে দিলেই নানা উপসর্গ শুরু হয়। তাই সিগারেটের বিকল্প থেরাপির কথা চিন্তা করতে হবে। বিকল্প থেরাপির কথা চিন্তা করেই ছেড়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করবেন।

০৪। একা একা ধূমপান না ছেড়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্য (যদি ধূমপায়ী থাকে), বন্ধু-বান্ধব ও সহকর্মীদের উৎসাহিত করে একসঙ্গে ধুমপান ছাড়ার ঘোষণা দিন। কারণ একটা কথা সত্য যে, “সৎ সঙ্গে স্বর্গে বাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।“ এইটা দিয়ে প্রধানত বুঝানো হয়েছে আপনি যতই ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন না কেন, যদি আপনার কাছে বন্ধু-বান্ধব ও সহকর্মীদের আপনার সামনে ধূমপান করতে দেখেন, তাহলে আপনার ইচ্ছা হওয়াটাও স্বাভাবিক। তাই সবাই একসঙ্গে প্রতিজ্ঞা করুন যে ধূমপান আর করবেন না।

০৫। মধু পুষ্টিগুণে ভরপুর। এটি শরীরের জন্য অনেক উপকারি। শরীর থেকে নিকোটিনের প্রভাব কাটাতে এবং ধূমপানের আসক্তি দূর করতে মধু দারুণ ভূমিকা রাখতে পারে। এতে দরকারি ভিটামিন, এনজাইম, প্রোটিন আছে, যা ধূমপানের অভ্যাস থেকে মুক্ত থাকতে সাহায্য করে।

০৬। যারা ধূমপান করে থাকে তাদের কাছ থেকে শুনা যায়, মানসিক চাপে থাকলেই নাকি সিগারেট খেতে মন চাই। এখন আপনাদের কার্যকরী পরামর্শ দেয়, মানসিক চাপের জন্যই যতি এই বিষাক্ত উপাদান গুলো পান করা লাগে, তাহলে মানসিক চাপ কমাতে চেষ্টা করুন। মানসিক চাপ কমাতে বন্ধুদের সাথে ঘুরাঘুরি করুন, হাসাহাসি করুন, বিকালে হাঁটতে বা খেলতে বের হন এবং প্রয়োজনে হালকা ম্যাসেজ নিন।

০৭। ধূমপান ছাড়তে আঙুরের রসও দারুণ কার্যকর ভুমিকা রাখে। ধূমপানের ফলে শরীরে যে ক্ষতিকর র‍্যাডিকেলস তৈরি হয়, তার প্রভাব কাটাতে আঙুরের রস খেতে পারেন। ফুসফুসের ক্ষতি কমাতে ও এই জুস যথেষ্ট সাহায্য করে থাকে।

০৮। অফিসের কোন কাজের বিরতিতে বা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার সময় সবচেয়ে বেশী চা বা কফিই খেয়ে থাকি। চা–কফির খাওয়ার সময়ই ধূমপান করার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়। তখন আপনি ধূমপান না খেয়ে নিউজ ফিড গুলো চেক করতে পারেন।

০৯। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও রঙিন ফলমূল খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ শাক সবজি ও ফলের মধ্যে রয়েছে এমন কিছু কার্যকরী উপাদান যা শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভুমিকা রাখে পাশাপাশি ধুমপান থেকে বিরত রাখতে ও অবদান রাখে।

১০। উপরোক্ত উপায় গুলো অনুসরণ করেও যদি ধুমপান ছাড়তে না পারেন, অর্থাৎ নিরুপায় হলে সর্বশেষ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে কাউন্সেলিং-এর সহায়তা নিতে পারেন। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আপনার সমস্যা বুঝে আরও কার্যকরী উপায় অবলম্বন করতে বলবে সাথে ভালো মেডিসিন ও দিতে পারবে। অর্থাৎ শেষ মুহর্তে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here