ওজন কমাবে যে খাবার গুলো জেনে নিন। আসলে ওজন কমানোর জন্য আমরা কত কিছুই না করে থাকি, অনেক উপায় অবলম্বন করে থাকি। কিন্ত দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে তারপরেও ভালো ভাবে ওজন কমাতে পারি না। ওজন কমানোর জন্য অনেক উপায় রয়েছে, তাঁর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে খাবার। অর্থাৎ এমন কিছু খাবার আছে যা আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করে আবার এমন কিছু খাবার আছে যা ওজন কমাতে বিরাট ভূমিকা রাখে, আপনার যদি ওজন বেশি থাকে, তাহলে ওজন বাড়ার খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখুন আর ওজন কমাবে যে খাবার গুলো সেগুলো খান।
এখানে আপনি জানতে পারবেন ওজন কমাবে যে ১০টি খাবার তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত ও কার্যকরী তথ্য।
০১। আপেল
০২। কাঠবাদাম
০৩। ডিম
০৪। বাতাবি লেবু
০৫। কমলা
০৬। পানি
০৭। গ্রীন টি
০৮। টমেটো
০৯। কলা
১০। ফুলকপি
০১। আপেল
ওজন কমানোর জন্য আপেল অসাধারণ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ নিয়মিত ১/২ টা আপেল খেলে ওজন ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। আপেলে রয়েছে এমন কিছু কার্যকরী উপাদান, যার ফলে প্রতিদিন আপেল খেলে, ক্ষুদা কমে যায় এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়া যাই না। একটি আপেলে ৪-৫ গ্রাম ফাইবার থাকে। তা ক্ষুধার উদ্রেক কমায়। এবং শরীরে জমে থাকা ফ্যাট কাটতে সাহায্য করে। যখন হুটহাট ক্ষুধা লাগে তখন অনেকেই অস্বাস্থ্যকর হাবিজাবি খাবার খান যা শরীরের জন্য ভালো না এবং ওজনও বাড়িয়ে তোলে। সুতরাং মুটিয়ে যাওয়া দূর করতে একটি আপেল রাখুন সাথে।
০২। কাঠবাদাম
ওজন কমানোর খাবার গুলোর মধ্যে কার্যকরী ও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কাঠবাদাম। বিভিন্ন ডাক্তাররা সব সময় পরামর্শ দিয়ে থাকেন শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ও ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত কাঠবাদাম খাওয়ার জন্য। কাঠবাদাম স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো একটি খাদ্য। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেল আছে তা পুরো দিন শরীরে এনার্জি সরবরাহ করে। কাঠবাদামের ফাইবার ক্ষুধা কমায়। সকাল শুরু করুন একমুঠো কাঠবাদাম দিয়ে।
০৩। ডিম
অনেকেই বলে থাকে সেদ্ধ ডিম খেলে ওজন বাড়ে পুরোপুরি যে মিথ্যা তাও নয়। আসলে ডিমের কিন্ত ২ পার্ট থাকে, একটা সাদা আরেকটা হলুদ। এখানে হলুদ অংশটা বেশি পরিমাণে খেলে আপনার ওজন বাড়বে আর ডিমের সাদা অংশ খেলে ওজন কমতে শুরু করবে ধীরে ধীরে। সকালে একটি/ দুটি ডিমের সাদা অংশ খেলে তা অনেকটা সময় ধরে পেটে থাকে এবং কম ক্ষুধার উদ্রেক করে। এতে অন্যান্য খাওয়া কম হয়। ডিম প্রোটিনের খুব ভালো একটি উত্স। তাই প্রতিদিন সকালের খাবারের তালিকায় ২টি সেদ্ধ ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন, ১/২ মাস পর ওজন অনেকটা কমে যাবে।
০৪। বাতাবি লেবু
বাতাবি লেবু শরীরের দুর্বলতা দূর করে পর্যাপ্ত শক্তি যোগাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এটির রয়েছে অনেক উপকারিতা। অনেক বিশেষজ্ঞরা বলেছে যে নিয়মিত বাতাবি লেবু খায়, তাঁর ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ওজন কমাতে লেবুর রসের ভূমিকা সম্পর্কে কম-বেশি সবাই জানেন। এক গ্লাস পানিতে লেবুর রস, ১ টেবিল চামচ মধু ও আধা চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে পান করুন। এটি পেটের মেদ কেটে ওজন কমাতে সাহায্য করবে। বাতাবি লেবু খেলে মুখের রুচি ও বৃদ্ধি পায়। এটি হচ্ছে দামে সবচেয়ে সস্তা ও সব জাইগায় পাওয়া যায়। তাই আপনার ওজন কমাতে বাতাবি লেবু খান।
০৫। কমলা
ওজন কমানোর জন্য কমলা ও ভূমিকা রাখে। কমলালেবুতে প্রচুর পরিমাণে পানি, ভিটামিন ও ফাইবার থাকে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর কর সহায়তা করে। ফলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। কমলায় বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। এর রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম এবং এর পাতলা ত্বকে আঁশ রয়েছে।কমলায় বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। এর রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম এবং এর পাতলা ত্বকে আঁশ রয়েছে। ওজন কমানো, ত্বকের পুষ্টি এমন কি হৃদযন্ত্র ভালো রেখে শরীরে রক্ত চলাচল নিয়মিত রাখতে সাহায্য করে কমলা। আপনি যদি ওজন খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তাহলে ২/৩ কেজি কমলা এনে বাসায় রেখে দেন, প্রতিদিন ১/২ টা করে খান, দেখবেন ওজন কমতে শুরু করবে।
০৬। পানি
দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করার চেষ্টা করুন। কারণ বেশি পরিমাণে পানি পান করলে শরীরের ওজন অনেকটা কমে যায়। দেহের অতিরিক্ত মেদ কমানোর জন্য বিশুদ্ধ পানি অনেকটা ভূমিকা রাখে। পানি শরীরে জমে থাকা টক্সিন এবং শর্করাকে শরীর থেকে বার করে দিতে সক্ষম। বেশি পরিমাণে পানি পান করলে প্রস্রাবের সঙ্গে শরীরের এই সমস্ত ক্ষতিকর পদার্থ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এতে শুধু যে শরীরকে সুস্থ মনে হয় তা-ই নয়, পাশাপাশি মেদও কমে। ওজন বাড়ার খাবার গুলো না খেয়ে থাকতে হবে, আর তাঁর পরিপ্রেক্ষিতে যদি পর্যাপ্ত পানি পান করুন। তাহলে শরীরের শক্তিও যোগায় সাথ ওজন কমাতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে।
০৭। গ্রীন টি
গ্রীন টি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি। শরীর ও মন সতেজ রাখতে এর ভূমিকা অপরিসীম। শুধু তাই নয় গ্রীন টি খেলে ওজন কমতে ও নিয়ন্ত্রণ হতে শুরু করে। আপনি কি জানেন গ্রীন টি খেলে শরীরে ক্যালোরি যোগায় না। অর্থাৎ জিরো ক্যালোরির এই পানীয় পাকস্থলীকে খালি রেখে মেদ বাড়তে দেয় না। কিছুটা খিদে মেটায়। কিন্তু শরীরে ক্যালোরি না প্রবেশ করায় ওজনও বাড়ে না। তাই শরীর স্বাস্থ্য ও মন সতেজ উৎফুল্ল রাখতে সকালে নাস্তার পর ও বিকালে বা সন্ধায় ১ কাপ গ্রীন টি খেতে পারেন। সবকিছু ঠিক থাকার পাশাপাশি ওজন ও খুব দ্রুত কমতে শুরু করবে।
০৮। টমেটো
টমেটো সবজি গুলোর মধ্যে অন্যতম সুস্বাদু ও রুচিশীল খাবার। এটি খুবই জনপ্রিয়, কারণ প্রাউ সব দেশেই চলে ও সবাই খেতে পছন্দ করে। এছাড়াও এটি অনেক ভাবে খাওয়া যায় আর টমেটোর রয়েছে অনেক বিস্ময়কর উপকারিতা। এবং এর যে উপাদান রয়েছে, ওজন কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এটিতে প্রচুর পরিমানে স্বাদ এবং পুষ্টি রয়েছে। এটি কাঁচা এবং রান্না দুভাবেই খাওয়া যাই। বেশীরভাগ মানুষ টমেটো দিয়ে সালাত বানিয়ে খেতে পছন্দ করে এবং অনেকে রান্না করে খেতেও পছন্দ করে। তবে যেভাবেই হোক দিনে অন্ততপক্ষে ১টি টমেটো খেতে পারেন, যদি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে বা কমাতে চান।
০৯। কলা
কলা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি খাবার। কলাতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও আরও অনেক প্রয়োজনীয় উপাদান। অনেকেই মনে করেন কলা খেলে নাকি ওজন বাড়ে। কিন্তু প্রতিদিন ছোট দুইটি কলা কিংবা বড় একটি কলা খেতে পারেন। এতে মোটা হবেন না। পাকা কলা খেলে ক্ষুধা কমে যায়, ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা যায়। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। আপনি প্রতিদিন ২/৩ টি করে পাকা কলে খেতে পারেন।
১০। ফুলকপি
হ্যাঁ ফুলকপি ও ওজন কমাতে বিশেষ সাহায্য করে। লো ক্যালোরি খাবার হওয়ার পাশাপাশি এতে ফাইবারও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। তাই ক্ষুধা কমে যায় ও পেট অনেকক্ষণ ভর্তি থাকে। তা ছাড়াও এতে ইন্ডোল, গ্লুকোসাইনোলেট এবং থায়োসাইনেট রয়েছে যা শরীর থেকে টক্সিন বের করতেও সাহায্য করে। ফলে খুব দ্রুত শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমতে শুরু করে। খুব সহজেই ও প্রাকৃতিক উপায়ে দেহের ওজন কমাতে চাইলে ফুলকপি খান নিয়মিত।