ভিটামিন এ রয়েছে যেসব খাবারে
ভিটামিন এ রয়েছে যেসব খাবারে

ভিটামিন এ রয়েছে যেসব খাবারে, সত্যি কথা বলতে আমাদের খুব কমই ধারণা আছে এই সম্পর্কে।

মানব দেহের জন্য অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদানের পাশাপাশি ভিটামিন -‘এ’ এর চাহিদাও রয়েছে অনেক। শরীর স্বাস্থ্য ভালো, সুন্দর রাখতে ও বিভিন্ন রোগ থেকে বেঁচে থাকতে চাইলে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ ভিটামিন এ প্রয়োজন। এজন্য প্রতিদিনের চাহিদা অনুযায়ী শরীরের জন্য যতটুকু পরিমান ভিটামিন -‘এ’ এর চাহিদা রয়েছে সেই চাহিদা পূ্রণ করা উচিত। কারণ শরীরে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে হতে পারে নানা ধরনের জটিলতা ও সমস্যা।

শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সুস্থ সবল ও ভালো রাখতে, দৃষ্টি শক্তি স্বাভাবিক রাখতে, দেহের অস্তির কাঠামো বৃদ্ধি করা সহ বিভিন্ন কাজ করতে ভিটামিন এ এর ভূমিকা অনন্য।

ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ হলো এক শ্রেণীর জৈব যৌগ যা বিভিন্ন খাদ্যে স্বল্প মাত্রায় থাকে এবং জীবের পুষ্টি সাধনে, স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশে এবং প্রজননে অত্যাবশ্যকীয় ভূমিকা রাখে। দেহে ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণের অভাবে বিভিন্ন রোগ বা সমস্যার প্রাদুর্ভাব হয়। যেমন ভিটামিন A’র অভাবে চোখের দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।

ভিটামিন এ রয়েছে যেসব খাবারে

০১। দুধ

দুধ পানীয় খাবারের মধ্যে অন্যতম, আমরা জানি। কিন্ত অনেকেই জানি না, গুরুর দুধের পুষ্টিকর উপাদান গুলো কী কী, কী আছে দুধে? তাহলে জেনে নেওয়া যাক, পানি (গ্রাম) ৮৭.৭, খাদ্যশক্তি(কিলো ক্যালরি) ৬৪, আমিষ (গ্রাম) ৩.৩, এ্যাশ (গ্রাম) ০.৭, ফ্যাট (গ্রাম) ৩.৬, কোলেস্টেরল (মিলিগ্রাম) ১১, পটাসিয়াম (মিলিগ্রাম) ১৪৪, ভিটামিন-এ (আই ইউ) ১৪০। (সূত্রঃ উকিপিডিয়া)

গরুর দুধে অনেক উপাদান আছে, আর ভিটামিনের মধ্যে এ টাই সবচেয়ে বেশি রয়েছে। অর্থাৎ যাদের ভিটামিন এ এর অভাব দেখা দিবে, তাঁদের উচিত প্রতিদিন ১ গ্লাস দুধ খাওয়া। এবং যেহেতু প্রতিটা মানুষেরই নির্দিষ্ট ভিটামিন এ প্রয়োজন, তাই মাঝে মাঝে বিশুদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর ১ গ্লাস গরুর দুধ খাওয়ার চেষ্টা করুন।

০২। গাজর

সবজি গুলোর মধ্যে গাজর অন্যতম ও প্রায় সবার কাছে প্রিয়। এটি খুব রুচিশীল খাবার। গাজরকে বলা হয় সুপার ফুড। গাজরে ভিটামিন এ রয়েছে যথেষ্ট, যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই দরকারি। একটি বড় গাজরে ১২ হাজার ২৮ আইইউ (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট) পরিমাণ ভিটামিন এ রয়েছে। যেখানে একটা মানুষের জন্যে দৈনিক ৫ হাজার আইইউ পরিমাণ ভিটামিন প্রয়োজন, সেখানে একটা গাজরেই রয়েছে তার দ্বিগুণ।

এখন বুঝতেই পারছেন একটি গাজরে কী পরিমাণ ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে! গাজরের মধ্যে থাকা বিটা ক্যারোটিন দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। চোখের অন্যান্য সমস্যা, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস ইত্যাদির মতো সমস্যায় বাধা দেয়। আরও বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

গাজরের ১০টি বিস্ময়কর উপকারিতা জানতে, এখানে ক্লিক করুন!

০৩। পালং শাক

পালং শাকেও যথেষ্ট ভিটামিন এ রয়েছে। আমরা অনেকেই পালং শাক খায় না যা দেহের শক্তি বৃদ্ধি করতে ও বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেতে যথেষ্ট সাহায্য করে। এক কাপ পরিমাণ পালং শাকে ভিটামিন এ এর পরিমাণ ২৮১৩ আইইউ। পালং শাকে আছে উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেসিয়াম, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া ও এটিতে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ, থাকার কারণে লিম্ফোসাইট বা রক্তের শ্বেত কণিকা দেহকে বিভিন্ন সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা করে। (সূত্রঃ উকিপিডিয়া)

০৪। মিষ্টি কুমড়া

মিষ্টি কুমড়া এক প্রকার ফল জাতীয় সবজি। এটি মিষ্টি লাউ নামেও পরিচিত। ভিটামিন এ এর অভাব পূরণ করতে চাইলে মাঝেমাঝে মিষ্টি কুমড়ার ভাজি বা সবজি রান্না করে খেতে পারেন। কারণ বিটা ক্যারোটিনযুক্ত মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। মানুষের শরীরের প্রায় ১৭০ ভাগ ভিটামিন “এ” এর অভাব অনায়াসে পূরণ হয়ে যায় মাত্র ১০০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার মাধ্যমে।

এর পাশাপাশি রয়েছে আরও অনেক পুষ্টিকর উপাদান যা সুস্থ সুন্দর ফিটনেসের জন্য খুবই দরকার। যেমনঃ শক্তি, শর্করা, চিনি, খাদ্যে ফাইবার, স্নেহ পদার্থ, প্রোটিন, বেটা ক্যারোটিন,লুটিন জিজানথেন, থায়ামিন (বি১), রিবোফ্লাভিন (বি২), ন্যায়েসেন (বি৪), প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫), ভিটামিন বি৬, ফোলেট (বি৯), ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম(2%)21 mg, লোহা(6%), ম্যাগনেসিয়াম (3%)12 mg, ম্যাঙ্গানিজ, (6%)0.125 mg, ফসফরাস(6%)44 mg, পটাশিয়াম (7%)340 mg, সোডিয়াম (0%)1 mg। তাই কেন খাবেন না নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া, এটিই হতে পারে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করার মাধ্যম।

০৫। মিষ্টি আলু

মিষ্টি আলুর সাথে আমরা সবাই পরিচিত আছি। হাত-পায়ের আঙুল ফলা কমানো, প্রসাবের সমস্যা দূর করা সহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য এর পাতা ও মূল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ভিটামিন এ এর অভাব হলে বা প্রয়োজন হলে মিষ্টি আলু খেতে পারেন। একটি মাঝারি সাইজের মিষ্টি আলুতে ভিটামিন এ এর পরিমাণ ২১৪% ডিভি। শুধু ভিটামিন এ’ই নয়, মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং বিটা-ক্যারোটিন যা শরীরের বলিরেখা দূর করে এবং শরীরের রক্ত পরিশোধন করে।

০৬। টমেটো

টমেটোতে আকর্ষণীয়তা, ভাল স্বাদ, উচ্চ পুষ্টিমান এবং বহুবিধ উপায়ে ব্যবহারযোগ্যতার কারণে সর্বত্রই এটি জনপ্রিয়। প্রায় সারা বিশ্বে এর চাহিদা রয়েছে। এটিতেও রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। টমেটোতে ক্যালোরি কম থাকলেও এর মিনারেল কনটেন্টে প্রচুর ভিটামিন এ রয়েছে। একটি মাঝারি আকারের টমেটো আপনার দৈনন্দিন চাহিদার ২০ শতাংশ পূরণ করতে সক্ষম। এবং এ সবজিতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও ভিটামিন-সি রয়েছে। যাদের রাতকানা সমস্যা রয়েছে, তাঁদের উচিত নিয়মিত ২/৩ টা টমেটো সালাদ বানিয়ে খাওয়া এবং রান্না করেও খেতে পারেন।

টমেটো খাওয়ার ৭টি বিস্ময়কর উপকারিতা সম্পর্কে জানুন, এখানে ক্লিক করুন!

০৭। লাল মরিচ

ভিটামিন এ’র জন্য আরেকটি জনপ্রিয় খাবার হচ্ছে লাল মরিচ। এটিতে ও পর্যাপ্ত ভিটামিন এ রয়েছে। লাল মরিচে ভিটামিন এ-তো থাকেই, পাশাপাশি এতে থাকে কারোটেনয়েডস ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। খাদ্য তালিকায় রাখলে এটি আপনার দৈনন্দিন ‘ভিটামিন এ’ চাহিদার ৪২ শতাংশ পূরণ করবে। যদিও লাল মরিচ অনেকেই পছন্দ করে না জাল হওয়ার কারণে। কিন্ত এর মধ্যে যে পরিমাণ উপাদান রয়েছে যা সবারই খাওয়া।

এছাড়াও রয়েছে আরও কিছু খাবার, তবে এইগুলো অন্যতম এবং খুব বেশি পরিমাণে ও পর্যাপ্ত পাওয়া যায়।

আরও জানতে ক্লিক করুন –

ভিটামিন সি রয়েছে যেসব খাবারে

প্রতিদিন কত লিটার পানি খাওয়া উচিত ও এর উপকারিতা

এ সময়ের সেরা ১০টি পেশা যা অবশ্যই আপনার জানা উচিত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here